পেনশন পাওয়ার বয়স বাড়ানোয় উত্তাল হয়ে উঠেছে ফ্রান্স। দেশটির সরকার অবসরগ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ চলছে। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রস্তাব নিয়ে বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। সেখানে বামপন্থিসহ ম্যাক্রোঁ-বিরোধীরা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে তা হারানোর সিদ্ধান্ত নেন। এই পরিস্থিতিতে ম্যাক্রোঁ একের পর এক বৈঠক করতে থাকেন। শেষ মুহূর্তে তিনি সিদ্ধান্ত নেন ভোটাভুটিতে না গিয়ে সরকার বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। ভোটাভুটি ছাড়াই পার্লামেন্টে বিল পাস করানো হবে।
প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন বলেন, পেনশনপ্রাপ্তদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করতে চায় না সরকার। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পরই ট্রেড ইউনিয়নগুলো বিক্ষোভ তীব্র করার সিদ্ধান্ত নেয়। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শহরের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছান। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে।
বিভিন্ন স্থান থেকে এ পর্যন্ত ২১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সংস্কারবিরোধী ইউনিয়নগুলো আগামী ২৩ মার্চ ফের ধর্মঘট ডেকেছে।
তবে পার্লামেন্টের বিরোধী দলগুলো, কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়ন এবং জনসাধারণের একাংশ সরকারের এই প্রস্তাব নিয়ে একমত হতে পারেনি। গত দু’মাস এ নিয়ে পার্লামেন্টে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়েছে, একাধিক ধর্মঘটও হয়েছে দেশটিতে।
ন্যাশনাল র্যালি পার্টির প্রেসিডেন্ট মেরিন লে পেন বৃহস্পতিবার পার্লামেন্ট ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পার্লামেন্টে ভোটের জন্য বিল না এনে হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা ফ্রান্সের গণতন্ত্রের ঐতিহ্যের সঙ্গে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এট প্রমাণ করছে যে এই সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া।’ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেন তিনি।