বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

কুমিল্লা-নোয়াখালী ফোর লেন

দুই বছরের কাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি

আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩, ০৪:০১

কুমিল্লা-নোয়াখালী ৫৯ কিলোমিটার সড়ক ফোর লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের দুই বছরের কাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। ভূমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত আইনি জটিলতার কারণে আটকে আছে এই সড়কের কুমিল্লার বাগমারা বাজার, শানিচোঁ ও চন্দনা অংশের ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটারের কাজ। ব্যস্ততম এই সড়কের এসব অংশের কাজ এখনো শুরু না হওয়ায় যানজটে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিভিন্ন পরিবহনের গাড়ির চালক, যাত্রী ও পথচারীদের। তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কুমিল্লা কার্যালয় সূত্র বলছে, এই প্রকল্পের কাজের প্রায় ৯৯ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে। কিছু অংশের ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের জন্য চেষ্টা চলছে। কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে নোয়াখালী থেকে কুমিল্লা হয়ে ঢাকার পথে দূরত্ব কমবে ৫০ কিলোমিটার এবং দীর্ঘ বছরের যানজটে দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি এই পথে যাতায়াতকারীদের সময়ও বাঁচবে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২ হাজার ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজ থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক ফোর লেন মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। এ কাজ ২০২০ সালের জুন মাসে সমাপ্ত করার কথা থাকলেও তা না হওয়ায় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু কারোনাকালে কাজের শ্লথগতিসহ নানা কারণে আগামী বছরেও কাজ সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা কম। এদিকে সড়কের তিনটি স্থানের সামান্য অংশের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে মামলা ও কিছু জটিলতায় কাজ আটকে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে এই সড়কে চলাচলকারী কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ অন্যান্য জেলার লাখো মানুষ। এই সড়কের লাকসামের দৌলতগঞ্জ বাজার বাইপাস ও বাগমারা বাজারে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে চার-পাঁচ ঘণ্টা। বাড়ছে দুর্ভোগ, ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে পরিবহন মালিক, যাত্রীসহ সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

লাকসাম বাইপাসের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনসহ নানা পেশার বেশ কয়েক জন বলেন, এখানে দ্রুত বাইপাস অথবা ওভারপাস নির্মাণ করা প্রয়োজন। কুমিল্লা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সহদপ্তর সম্পাদক মো. ফারুক হোসেন সুমনসহ চারজন পরিবহন নেতা বলেন, ব্যস্ততম এই সড়কের কিছু স্থানের কাজ এখনো শুরু হয়নি। এসব অংশে দীর্ঘ সময় যানজটে আটকা পড়ে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। উপকূল পরিবহনের পরিচালক অধ্যাপক কবির আহমেদ জানান, সড়কের কিছু অংশে যানজটের কারণে যাত্রীরা বিরক্ত। দ্রুত সড়কটির কাজ শেষ হলে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোসহ সারা দেশের মানুষ উপকৃত হবে। কম সময়ে গন্তব্যে যাতায়াতসহ পণ্যদ্রব্য ও মালামাল পরিবহনে তাদের আর্থসামাজিক অবস্থারও ব্যাপক উন্নতি হবে। কুমিল্লা মোটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, দ্রুত কাজ শেষ হলে চালক, যাত্রী ও সব শ্রেণিপেশার মানুষের দুর্ভোগ কমবে।

সওজ-কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, এই প্রকল্পের মোট কাজের প্রায় ৯৯ ভাগ সমাপ্ত হয়ে নান্দনিক সৌন্দর্য সড়কপথ দৃশ্যমান হয়েছে। তবে সড়কের কুমিল্লা অংশের বাগমারা বাজার, শানিচোঁ ও চন্দনার কাজ রিট ও মামলা জটিলতায় আটকে আছে। আশা করছি শিগিগর এ সমস্যার একটা সমাধান হবে। লাকসামে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার বাইপাস করতে হবে। এজন্য ভূমি পরিমাপের কাজ চলছে। কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে এই পথে যাতায়াতকারীদের সময় বাঁচবে এবং যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

 

ইত্তেফাক/ইআ