দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার কুচের পাড়া গ্রামের জমির মাটি খননের সময় ভেকুর মাথায় ভেসে ওঠা প্রস্তরলিপিটি একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার প্রস্তরলিপি। সেটির পাঠোদ্ধার করেছেন জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপিলত্যের বিশেষজ্ঞ ড. রয়সুকে ফুরই বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বাধীন সেন।
লিপিটিতে দাশ পদবী ধারী জিন দাসের কায়স্ত পরিবারের প্রসস্তি রয়েছে। লিপি অনুসারে পরিবারের সর্বশেষ সদস্য জিন দাস একটি কৈতভি (দূর্গার একটি রূপ) দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। লিপিটি প্রধানত ওই মন্দির স্থাপনের স্মারক। লিপিটি উৎকীর্ণ করার সময়কাল সরাসরি উল্লেখ নেই। লিপিতত্ত্ব ভিত্তিতে সময়কাল আনুমানিক দশ-এগারো শতকের।
৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলা কুচের পাড়া থেকে মাটি খননের সময় প্রস্তরলিপিটি উদ্ধার হয়। পাশাপাশি অসংখ্য ইটের প্রাচীরসহ একটি প্রাচীন স্থাপনার অংশ বের হয়ে আসে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. স্বাধীন সেনকে জানানো হলে তিনি দুজন গবেষককে পাঠান। তারা থানা হেফাজতে থাকা প্রস্তর লিপির ছবি ও প্রাপ্ত স্থানের ধ্বংশাবশেষ থেকে ছবি সংগ্রহ করেন।
ড. স্বাধীন সেনের বলেন, প্রস্তরলিপির ছবি পাট উদ্ধারে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপিলত্যের বিশেষজ্ঞ বন্ধুবর ড. রয়সুকে ফুরই’র কাছে পাঠানো হয়েছিল। তিনি লিপিটির পাটটি লিখিতভাবে পাঠিয়েছেন।
প্রাচীন জনপদ রাজাবিরাট, পুন্ডবর্ধন, কোটিবর্ষ, গৌড়, পান্ডুয়া এবং কৈলা শহরের পতনের পর গুপ্ত পাল, সেন যুগ অতিক্রম করে মোগল যুগে এসে ঘোড়াঘাটে নগরের অভ্যুদয় ঘটে। মোগল অধিকার ভুক্ত হওয়ার আগেই পাঠান ও কাকশালরাই ছিল সর্বেসর্বা। পাঠানদের পুর্বে সুলতানী আমলে কামতা রাজ্যের দক্ষিণ সীমান্ত এলাকার একটি ছোট দূর্গরুপে ঘোড়াঘাটের পরিচয় ছিল। এরপর বিভিন্ন শাসনকর্তা দ্বারা ঘোড়াঘাট শাসিত হয়। মোগল সাম্রাজ্যের ১৩ সরকারের মধ্যে সরকার ঘোড়াঘাট একটি সর্বশ্রেষ্ঠ সরকার ছিল। যা ২২ জন ফৌজদার দ্বারা শাসিত হয়েছে। শেষ ফৌজদার ছিলেন কমর উদ্দিন।