শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ওষুধ শিল্পের চাহিদা মেটাচ্ছে সিরাজগেঞ্জে উৎপাদিত হাড়ের গুড়ো

আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৩, ১৬:০০

সিরাজগঞ্জের কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কালিয়া গ্রামে গড়ে উঠেছে হাড় গুড়ার তৈরির যমুনা বোন মিল কারখানা। আর এখান থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১০ লাখ টাকার উৎপাদিত হাড় গুড়ার খুলনার ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে দিচ্ছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিতে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। 

কারখানা সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জ ছাড়াও আশপাশের পাবনা, নাটোর, বগুড়া, টাঙ্গাইল জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হাড় প্রতি কেজি ১৫ টাকা দরে কেনা হয়। হাড়গুলো মেশিনের সাহায্যে গুড়া করে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হয়। প্রতি মাসে প্রায় দুই ট্রাক হাড়ের গুড়া খুলনায় মহাজনদের কাছে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া কারখানায় নারী ও পুরুষ মিলে ২০ জনের মতো লোক কাজ করেছেন।

কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিক চম্পা ও আছের বলেন, আমরা এখানে প্রায় ১০ বছর ধরে কাজ করি। দৈনিক ৩৫০ টাকা করে বেতন পাই যা দিয়ে আমার সংসার চলে। স্বামীর সঙ্গে আমার আয়ে সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।

হাড় সংগ্রহকারী সোলায়মান বলেন, আমরা কয়েকজন প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে হাড় সংগ্রহ করে এখানে ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করি। দৈনিক প্রায় গড়ে ২০ কেজি হাড় সংগ্রহ হয়। এ থেকে যে টাকা পাই তা দিয়ে কোনো মতে সংসার চলে।

তিনি বলেন, গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন কসাইরা আর আগের মত হার ফেলায় না মাংসের সঙ্গেই বিক্রি করে দেয়। তাই এখন আগের মত আর হার সংগ্রহ করতে পারি না।

সিরাজগেঞ্জে উৎপাদিত হাড়ের গুড়ো যাচ্ছে দেশের ওষুধ কোম্পানিতে। ছবি: ইত্তেফাক

কারখানার মালিক হাফিজুল শেখ বলেন, প্রায় ২৫ বছর আগে এই ব্যবসা শুরু করি। সারা দেশে ছয়টি হাড়ের কালকারখানা রয়েছে তার মধ্যে সিরাজগঞ্জে একটি। আমরা কুড়ানো হাড় কিনে নিয়ে গুড়ো করে খুলনার ডিলার মাধ্যেমে বিক্রি করি। শুনেছি তারা এই সব গুড়া দেশের বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছে বিক্রি করে। অনেক সময় চাহিদা মত গুড়ো সরবরাহও করতে পারি না। এখন আবার হাড়ও তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে আমাদের হাঁড়ের গুড়া উৎপাদনের ওপর প্রভাব পরেছে।

ফোনে যোগাযোগ করা হলে হাড়ের গুড়া ক্রেতা খুলনার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন বলেন, এই হাড়ের গুড়া থেকে গবাদি পশুর খাবার, মুরগির খাবার ও ওষুধ কোম্পানিতে ক্যাপসুল তৈরির কভার তৈরি হয়।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বলেন, বিষয়টি আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। তবুও জানার পর এ বিষয়ে খবর নিয়েছি। হাড় গুড়ো করে ওষুধ তৈরির প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয় বলে জানতে পেরেছি। 

ইত্তেফাক/আরএজে