মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

নাইন্দা হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধই কৃষকদের কাল

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৬

সুনামগঞ্জের ছাতকে নাইন্দা হাওরে অপরিকল্পিত ফসল রক্ষা বাঁধ এখন কৃষকদের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের ২৮ নম্বার পিআইসি মির্জার খালের বাঁধের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই হাওরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কয়েক হাজার একর জমির বোরো ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন হাওর পাড়ের সহস্রাধিক কৃষক।

দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিকল্পনা অনুযায়ী মির্জার খালের বাঁধ সংস্কার না হলে হাওরের ফসল রক্ষা করা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

সাবেক ইউপি সদস্য মনির উদ্দিনসহ এলাকার কৃষকরা জানান, মির্জার খাল দিয়ে হাওরসহ আশপাশের এলাকায় জমে যাওয়া বৃষ্টির পানি সুরমা নদীতে পড়ে। প্রতি বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় মির্জার খালে পরিকল্পনা অনুযায়ী ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়ে থাকে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য দু'পাশে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ব্যারিকেড করে ছোট একটি নালা রেখে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বন্যা না আসা পর্যন্ত নালাটি উন্মুক্ত থাকে।

ছাতকে ডোবার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে নাইন্দার হাওরের বোরো ফসল।ছবি: ইত্তেফাক

পিআইসি'র মাধ্যমে এক হাজারের মতো বস্তায় মাটি ভর্তি করে খালের দু'পাশে রাখা হয়। সুরমা নদী থেকে খাল দিয়ে বন্যার পানি হাওরের দিকে প্রবাহিত হলে মাটি ভর্তি বস্তা দিয়ে তাৎক্ষণিক নালা ভরাট করা হয়। প্রায় ২০ বছর ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পিআইসি সমন্বয়ে এ পদ্ধতিতে মির্জার খালে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু চলতি বছরে এর ব্যতিক্রম করে নালা না রেখে বাঁধ নির্মাণ করায় বন্যার আগেই ডুবরার পানিতে হাওরের ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।

হাওরের ফসল রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হাওর এলাকার মনির উদ্দিন, ফারুক মিয়া, শাহাব উদ্দিনসহ তিন শতাধিক কৃষক স্বাক্ষরিত এক আবেদন বুধবার (২২ মার্চ) সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অনুরূপ আবেদন করেছেন কৃষকরা। আবেদনের কপি পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী, ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবরে ও দেওয়া হয়েছে।

অপরিকল্পিত ফসল রক্ষা বাঁধ পানিতে তলিয়ে হাওরের ফসল ক্ষেত। ছবি: ইত্তেফাক

কৃষকদের দাবি, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে হাওরের ফসল রক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যতায় হাওরের বোরো ফসল ডোবার পানিতে তলিয়ে যাবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারি প্রকৌশলী (ছাতক) মো. মহি উদ্দিন জানান, নাইন্দা হাওরের ফসল রক্ষায় মির্জার খালে বাঁধ নির্মাণ কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। হাওরে জলাবদ্ধতার বিষয়টি স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/আরএজে