তাইওয়ানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মা ইং-জিউ ১২ দিনের সফরে সোমবার (২৭ মার্চ) চীন পৌঁছান। চীনের কাছে তাইওয়ানের ১৪তম কূটনৈতিক অংশীদার হারানোর একদিন পর তার এই সফর হচ্ছে। দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যদিও এটি সাবেক প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত সফর, তবে এটি রাজনৈতিকভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ। ইং-জিউয়ের নীতি তাইওয়ান ও বেইজিংকে তাদের নিকটতম সম্পর্কের দিকে নিয়ে এসেছিল।
কিন্তু মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে তার পদত্যাগের পরে এই সম্পর্কটি নষ্ট হয়ে যায়। তার উত্তরসূরি গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত দ্বীপটির স্বায়ত্তশাসন সংরক্ষণের দিকে মনোনিবেশ করেছেন যাকে চীন তার নিজস্ব অঞ্চল বলে দাবি করে।
ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ইং-জিউ এই সফর করতে যাচ্ছেন। বেইজিং তাইওয়ানকে চাপ দেওয়ার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে, তার কূটনৈতিক মিত্রদের টেনে নিচ্ছে এবং প্রায় প্রতিদিনই দ্বীপের দিকে সামরিক যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে।
রোববার (২৬ মার্চ) হন্ডুরাস তাইওয়ান ত্যাগ করে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। ফলে, এখন মাত্র ১৩টি দেশ তাইওয়ানকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিরোধী দল ন্যাশনালিস্ট পার্টির (কুওমিংতাং) সদস্য ইং-জিউ নিকটবর্তী নানজিং সফর শুরু করার আগে সাংহাইতে অবতরণ করেন।
২৭ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি মূল ভূখণ্ড সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তারপর উহান, চাংশা ও অন্যান্য শহরে বিরতি নিবেন। তিনি তাইওয়ান থেকে কলেজ শিক্ষার্থীদের সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয় ও চাংশার হুনান বিশ্ববিদ্যালয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা করতে নিয়ে গিয়েছেন।
তার এই সফর তাইওয়ানে খুব বেশি বিতর্কের সৃষ্টি করেনি। কারণ, তাইওয়ানের জনগণ কুওমিনতাং রাজনীতিবিদদের চীন সফর দেখতে দেখতে অভ্যস্ত। তবে কিছু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও অ্যাক্টিভিস্ট এর সমালোচনা করেছেন।
অন্যদিকে, ঐক্যপন্থী শিবিরের একটি ছোট দলও বিমানবন্দরে এসে তাদের সমর্থন জানায়। তারা চিৎকার করে বলেছিল, 'একটি ক্রস-স্ট্রেইট সম্পর্ক বসন্তকালে ফুলের মতো ফুটে ওঠে এবং উভয় পক্ষই একটি পরিবার।'
ইং-জিউ বেইজিং যাবেন না, তবে চীনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। ২০১৫ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি সিঙ্গাপুরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
১৯৪৯ সালে চীনের গৃহযুদ্ধের সময় তাইওয়ান চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর এটি ছিল দুই পক্ষের নেতাদের মধ্যে প্রথম বৈঠক, তবে এটি বাস্তবের চেয়ে বেশি প্রতীকী বলে বিবেচিত হয়েছিল।