বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ভারতের ককবরক ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং-এর আকস্মিক প্রয়াণে জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এবং কবির শোকসন্তপ্ত পরিবারের সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। সোমবার (২৭ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় কবিতা পরিষদের নেতৃবৃন্দ এই শোক প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তার অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ ভারতের মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। তিনি ছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের একজন একনিষ্ঠ সুহৃদ। কবি চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং উত্তর-পূর্ব জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠন করে বাংলাদেশ ও উত্তরপূর্ব ভারতের কবি-সাহিত্যিক-সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে এক নিবিড় ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। তার প্রয়াণ আমাদের জন্যে অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করল।
সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে ত্রিপুর রাজ্যের বিশিষ্ট কবি চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং প্রাতঃভ্রমণ কালে আকস্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে প্রয়াত হয়েছেন। তার প্রয়াণে রাজ্যের সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগৎ শোকাহত। ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন কবি চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং। উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অন্যতম বিখ্যাত কবি তিনি।
বরেণ্য এই কবি রাজ্যের আদিবাসীদের ভাষা ককবরক-এ লিখেছেন এবং কবিতার পাঁচটি বই প্রকাশ করেছেন। ‘সমসাময়িক ত্রিপুরায় জনজীবনের যন্ত্রণা’ তার কবিতার মূল প্রতিপাদ্য। ত্রিপুরার পাহাড়, খরস্রোতা নদী এবং পাখির গানের সুরকে প্রতিস্থাপন করেছেন কবিতায়।
ককবরক সাহিত্যের বিকাশে অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৭ সালে সাহিত্য একাডেমি, নয়াদিল্লি থেকে ভাষাসম্মান পুরস্কার অর্জন করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর গীতাঞ্জলি ককবরক ভাষায় স্বরলিপি তৈরি করেন কবি চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং।
১৯৯৭ সালেই প্রতিষ্ঠা করেন ককবরক সাহিত্য একাডেমি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে এবং নাতি-নাতনিদের রেখে গেছেন। ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত তিনি ছিলেন সাহিত্য একাডেমির উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় মৌখিক সাহিত্য কেন্দ্র-এর অধিকর্তা।