শেরপুরে শোবার ঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার বলাইয়েরচর ইউনিয়নের ফকিরগঞ্জ গ্রাম থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের মো. শামসুল হক (৮৫) ও তার স্ত্রী ছয়েরা বেগম (৭৮)।
পুলিশের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যার পর বিষপানে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন শামছুল হক। পরে বিকালে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার রাতে শামছুল ও তার স্ত্রী ঘরে ঘুমাতে যান। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে তাদের নাতি ডাকাডাকি করলেও তারা দরজা খোলেননি। পরে ঘরের দরজার ফাঁক দিয়ে সায়েরা বেগমকে বিছানায় এবং শামসুল হককে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তার চিৎকারে পরিবারের অন্য সদস্যরা ছুটে আসেন। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতের ছেলে রফিকুল ইসলামের দাবি, শামসুল হক পারিবারিক কলহের কারণে কিছুদিন থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। স্ত্রী ছয়েরা বেগমের সঙ্গে তার ঝগড়া লেগেই থাকত। এ নিয়ে দুই মাস আগে বাপের বাড়ি চলে যান ছয়েরা। এক সপ্তাহ আগে তিনি স্বামীর বাড়ি আসেন। এরপর থেকেই আবারও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়।
রফিকুল বলেন, বাবা মাঝে মধ্যেই মাকে মারধর করতেন। বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিতে চাইলেও যেতেন না। কাল বাবা বলেছিলেন, রাতে আমি চিল্লায় যাব। আমি মরলে বাবার পাশে আমারে কবর দিস।
শেরপুর সদর থানার ওসি বছির আহমেদ বাদল বলেন, নিহত শামছুলের মুখে বিষের গন্ধ পাওয়া গেছে। আর ছয়েরা বেগমের কানের ভেতর রক্ত দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, স্ত্রীকে হত্যার পর বৃদ্ধ শামছুল বিষপানে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের অন্য কিছু বের হয়ে এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।