সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

কুমির প্রজনন কেন্দ্র হতে পারে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র

আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৩, ২২:১৪

বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ি সীমান্তবর্তী ঘুমধুমে গড়ে উঠা কুমির প্রজনন কেন্দ্রটি হতে পারে পর্যটনের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। যা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মৌসুমী পযর্টক ও দেশীয় নানা শ্রেণির পেশার মানুষের বিনোদন কেন্দ্র।

দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম কুমিরের প্রজন্ম কেন্দ্রটি পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে ২৫ একর পাহাড়ি জমিতে ২০০৮ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ খামার গড়ে তোলে। বাণিজ্যিকভাবে সেখানে কুমিরের চাষ শুরু হয় ২০১০ সালে। কুমিরের এ খামারটি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের কাছাকাছি ঘুমধুম পাহাড়ি এলাকার তুমব্রু গ্রামে অবস্থিত। পূর্ব পাশে পাহাড়ি ও সামান্য ঢালু জায়গার ওপর প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিমভাবে পরিবেশ সম্মত উপায়ে তৈরি এই কুমির প্রজনন কেন্দ্র এখন এশিয়ার বৃহত্তর কুমির প্রজনন কেন্দ্র হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে।

তুমব্রু গ্রামটি মিয়ানমার সীমান্তের একেবারে কাছে। খামারের পাহাড় থেকে দেখা যায় মিয়ানমারও। বর্তমানে ওই খামারে কাজ করছেন দুজন প্রকল্প কর্মকর্তার অধীনে ২০ জন কর্মচারী। এ খামার থেকে কুমির রপ্তানি করে প্রতি বছর কোটি টাকা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে।

চলতি বছেরর শুরুর দিকে বিপুল পরিমাণ বাচ্চা কুমির জন্ম দিয়েছিল। বাচ্চা কুমির বিক্রয় করে রপ্তানি করে চলতি বছরে আয় হয়েছে অর্ধকোটি টাকা। আকিজ গ্রুপের অর্থায়নে তৈরি এই কুমির প্রজনন কেন্দ্র যেমন বাচ্চা ও মা কুমির বিক্রয় করে আয় করছে কোটি কোটি টাকা, তেমনিভাবে পযর্টক ও স্থানীয়দের জন্য হয়ে উঠেছে বিনোদন কেন্দ্র। ছুটির দিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন কিছু মুক্ত ও প্রাকৃতিক সৌন্দয্য উপভোগ করার জন্য চলে আসে পাহাড়ে ঘেরা এই কুমির প্রজনন ও বিনোদন কেন্দ্রে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ বেষ্টনী ঘেরা উঁচু নিচু ঢালে ও ছোট বড় ছড়ার বাঁধ নির্মাণ করে পানি বন্দি করে কুমিরের আভাস স্থল তৈরি করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ পরিবেশ উপযোগী। 

কুমির প্রজনন কেন্দ্রে ঘুরতে আসা এক পযর্টক বলেন, সরকার গুরুত্ব সহকারে কুমির প্রজনন ও বিনোদনের উপর নজর দিলে এটি হতে পারে বিনোদন ও পর্যটনের জন্য অন্যতম স্থান।

এ বিষয়ে কেন্দ্র ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কুমির রপ্তানি আশার আলো দেখাচ্ছে। এ খাত এগিয়ে নিতে কাজ করছে সরকার।


 
তিনি আরও বলেন, ২০১০ সালের আগস্টে অষ্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে ৫০টি অষ্ট্রেলীয় প্রজাতির কুমির আনা হয়। এর একেকটির দাম পড়ে ৩ লাখ টাকা। পরে নাইক্ষ্যংছড়ির ওই খামারের উন্মুক্ত জলাশয়ে সেগুলো ছাড়া হয়। এর মধ্যে মারা যায় ৪টি কুমির। ৪৬টি সুস্থ কুমিরের মধ্যে পরে স্ত্রী কুমিরের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১ ও পুরুষ ১৫ তে। সেই ৪৬টি কুমির থেকে নাইক্ষ্যংছড়ির ওয়াইল্ড লাইফ ফার্মে বর্তমানে বাচ্চাসহ ছোট-বড় কুমিরের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০০। খামারে উন্মুক্ত জলাশয় ও খাঁচার ভিতর দুইভাবেই কুমির রাখা হয়েছে। প্রাণি বিজ্ঞানীদের মতে, এসব কুমির প্রায় ১০০ বছর বাঁচে।

ইত্তেফাক/পিও