শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সূর্যমুখীর হাসিতে স্বপ্ন দেখছেন কৃষক 

আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:৫২

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর এবং ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। চলতি মৌসুমে ব্যাপক হারে সূর্যমুখী ফুল চাষ করে অধিক লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক। ইতোমধ্যে গাছে ফুল ধরতে শুরু করেছে। দুই জেলার উপজেলাগুলো জমিতে জমিতে সূর্যমুখীর হাসি ছড়াচ্ছে চারিদিকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা ও ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে হলুদ ফুল আর সবুজ গাছের অপরূপ দৃশ্য। সূর্যমুখীর সৌন্দর্য দেখতে আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা জমির পাশে ভিড় জমাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার ফুলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলছেন।

রায়পুরে সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলছেন অনেকেই। ছবি: ইত্তেফাক

সোনাপুর ইউনিয়নের কৃষক মো. চুন্নু মিয়া জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে আমি জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে সূর্যমুখী ফুল চাষে ফলন ও দাম দুটোই ভালো পাওয়া যায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সূর্যমুখী ফুল থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ো যাবে।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের বাগান মালিক মো. পলাশ মেম্বার ও জটিল মেম্বার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে শুধু মানুষের সেবা করে বসে না থেকে পাশাপাশি কিছু করার প্রয়োজন ও মানুষকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে গত বছর এবং এবার এই সূর্যমুখী চাষ করি। গত বছর ৫০ শতাংশ জায়গায় আমরা প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক সূর্যমুখী চাষ করেছিলাম। ভালো ফলন, সেই সঙ্গে লাভবান হয়েছিলাম।

কম পরিশ্রমে সূর্যমুখী ফুল চাষে ফলন ও দাম ভালো পাওয়া যায়। ছবি: ইত্তেফাক

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা নিয়ে এ বছর প্রায় দুই একর জমি নিয়ে বাগান করা হয়েছে, যেটা ব্যক্তি উদ্যোগে লক্ষ্মীপুর জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম সূর্যমুখী বাগান। জমি চাষে আমাদের প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে অনেক ফুল এখন গাছে আছে। তা দিয়ে আশা করছি লাভবান হতে পারব।

এদিকে, সূর্যমুখী ফুল চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি প্রণোদনার পাশাপাশি বীজ সরবরাহ করাসহ সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বাড়িয়েছে সূর্যমুখী ফুল।ছবি: ইত্তেফাক

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবার তজুমদ্দিনে ব্যাপকহারে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। এবছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হেক্টর, কম সময়ে অধিক ফলন হওয়ায় ৩০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ হয়েছে। কৃষকদের স্বাবলম্বী করতেই সূর্যমুখী ফুল চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। আগামীতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছি।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তহমিনা খাতুন বলেন, সূর্যমুখী তেল অনেক উন্নতমানের ও স্বাস্থ্যসম্মত। সরকার সূর্যমুখীর চাষ বাড়াতে কৃষককে বিভিন্ন প্রকল্প এবং প্রণোদনার মাধ্যমে সহযোগিতা করছে। পাশাপাশি বর্তমান সরকার তেল উৎপাদনে জোর দিয়েছে। সে হিসেবে চলতি বছর রায়পুরে সর্ষে ও সূর্যমুখীর চাষ বেড়েছে।

ভোলার তজুমদ্দিনে ৩০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ হয়েছে। ছবি: ইত্তেফাক

তিনি বলেন, রায়পুরে বিনোদনের জায়গা কম থাকায় বাগানটিতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় হচ্ছে। এখানে এসে অনেকে সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

ইত্তেফাক/আরএজে