চলতি বছরে উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জ মহাসড়কের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান থাকায় বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ স্থান শনাক্ত করেছে জেলা পুলিশ। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল হয়ে চান্দাইকোনা মহাসড়কে ৫০ কিলোমিটার জুড়ে ছোট বড় মিলে ২০টি স্থান সংস্কারে জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে ১৪টি ঝুকিঁপূর্ণস্থানে যানজটের বেশি আশঙ্কা রয়েছে।
তবে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে মহাসড়কের কাজ দ্রুত সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, উত্তবঙ্গের এ সড়কপথে প্রায় ১৬ জেলার মানুষের চলাচলের জন্য স্বাভাবিক সময়ে দিনে ১৫ থেকে ২০ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও ঈদে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সৃষ্টি যানজটে যাত্রীদের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়াও মহাসড়কে রাস্তা প্রসস্তকরণ ও সংস্কার কাজ চলমান থাকার কারণে বিভিন্ন জায়গায় যানবাহন চলাচল করছে এক লেন দিয়ে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কটিতে চার লেনে প্রসস্থকরণ ও সংস্কার কাজ চলছে। রাস্তার অনেক জায়গায় যানবাহন এক লেনে চলাচল করার কারণে যানজট লেগেই থাকছে। মহাসড়কের দুপাশে ড্যাম ট্রাক দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য খানাখন্দে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আবার অনেক জায়গায় রাস্তা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতে পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ধীরগতি, কখনও থেমে থেমে, আবার দীর্ঘ সময় যানজটে যাত্রী পরিবহনে থাকা যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে, নবনির্মিত নলকা সেতুর উত্তরের লেন খুলে দিলেও ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন সেতু দিয়েই ধীরগতিতে যানবহন চলাচল করছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
হেগো-মীর আকতার জেভি প্রকল্পের ম্যানেজার এখলাস উদ্দিন বলেন, জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। মহাসড়কের যেসব জায়গায় খানাখন্দে রয়েছে সেগুলো জায়গায় মেরামত করে দেওয়া হবে। সলঙ্গা বাজার, দাদপুর বাজার, ঘুড়কা বাজার, ভূঁইয়াগাতী বাজার ও চান্দাইকোনা বাজার এলাকায় ১৫ রমজানের মধ্যে চার লেনের নতুন সড়ক খুলে দেওয়া হবে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি মো. বদরুল কবির বলেন, সাসেক-২ এর কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জেলা পুলিশ এবং আমাদের দুই দফা মিটিং হয়েছে। যমুনা সেতু থেকে চান্দাইকোনো পর্যন্ত ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো ১৫ রমজানের মধ্যে তারা সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে আমাদের ১০টা মোটরসাইকেল মোবাইল টিম, ১৬ পয়েন্টে ১৬ পিকেট টিম কাজ করবে। সেই সঙ্গে মাইকিং ও জিডিটাল সাইনবোর্ড লাগানো হবে।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান সালেক বলেন, ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখতে জেলা পুলিশের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। মহাসড়কে আমাদের ১৫ থেকে ১৮টা মোবাইল টিম থাকবে। তবে ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে কতজন পুলিশ সদস্য কাজ করবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মন্ডল বলেন, মহাসড়কে প্রায় ১৪টা ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সাসেক-২ এর কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে ইতোমধ্যেই আমি মিটিং করেছি। ১২ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে তারা সেগুলো সংস্কার করে দেবে।
ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।