পঞ্চগড়ে মামলার যন্ত্রণায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে সাদ্দাম হোসেন (৩০) নামে এক যুবক আত্নহত্যা করেছেন বলে দাবি তার পরিবারের। শনিবার (২৯ এপ্রিল) নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই যুবক।
সাদ্দামের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বেংহারি বনগ্রাম ইউনিয়নের ডাংগাপাড়া গ্রামে। সে ওই গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে এবং সদর উপজেলার হুমায়ুন মার্কেটের বালু ব্যবসায়ী। মামলায় পুলিশি ভয়ে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকা এবং বালু ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় বলে মনে করছেন পরিবার।
বোদা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেন। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) কনক কুমার দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নিহত সাদ্দামের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, গত মার্চ মাসে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় আহমদিয়া মুসলিম জামাতসহ পুলিশ প্রায় ৩০টি মামলা দায়ের করে। বোদা থানায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পর পরই সে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল। পরিস্থিতি শান্ত হলে সে বাড়িতে ফিরে আসে। কিন্তু মামলা থেকে জামিন না নেওয়ায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছিল সে। এ কারণে তার বালুর ব্যবসাও বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে সে আত্মহত্যা করে।
সাদ্দামের বাবা আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মামলার যন্ত্রণায় ঢাকায় পালিয়েছিল সাদ্দাম। বাড়িতে এসে গ্রেপ্তার আতঙ্কে ছিল। তার চলাফেরায় অসংগতি ছিল। সে হতাশায় ছিল। আমার কষ্ট একটাই আমার ছেলে মামলার আসামি হয়ে আত্মহত্যা করল।
সাদ্দামের মা সেলিনা আকতার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার কোটি টাকার সম্পদ ছেলেটা চলে গেল। মারা যাওয়ার আগে আমার ছেলে বলেছিল, ‘মা আমাকে ভালো লাগতেছে না, আমি মারা যাব’। আমি সকালে সেমাই রান্না করে সাদ্দামকে খাইয়েছিলাম। এভাবে সে আত্মহত্যা করবে আমি ভাবিনি।
সাদ্দামের চাচা তাহেরুল ইসলাম জানান, মামলা হওয়ায় টাকার অভাবে জামিন না নেওয়ায় গত কয়েকদিন থেকে সাদ্দাম হতাশাগ্রস্থ ছিল। একদিকে মামলা অন্যদিকে তার বালুর ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় সে আত্মহত্যা করতে পারে।
বোদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামুনুর রশিদ জানান, পুলিশ খবর পেয়ে তার বাসায় গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। সাদ্দামের সেমি পাকা ঘরে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক ময়নাতদন্তও করা হয়েছে। এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।