শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দৌলতপুর সরকারি পিএস উচ্চ বিদ্যালয়

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট : ০৬ মে ২০২৩, ০২:১০

দৌলতপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত সরকারি প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্বাচনি (টেস্ট) পরীক্ষায় তিন বিষয়ে অনুত্তীর্ণ বা ফেল করা ব্যবসায় শিক্ষা শাখার এক শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের ফরম পূরণে কয়েক জন সহকারী শিক্ষকের সহযোগিতায় সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমানকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে দেন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান। ঐ কমিটির শিক্ষকরা জানান, তারা বিদ্যালয়ের জেনারেল শাখায় এ বছর ১২৮ জনের ফরম পূরণ নিশ্চিত করেন। কিন্তু ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ফেল করা অতিরিক্ত এক জনের ফরম পূরণ কীভাবে হয়েছে, তা তাদের জানা নেই। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন।

অভিযোগ রয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত স্কুলের প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে আইসিটি বাবদ ২৪০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। প্রথম দিকে  তা কোথায় খরচ হয়েছে তার কোনো হিসাব নেই।  ইদানীং বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ডেমনস্ট্রেটর জাফর এবং প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের নামে যৌথ হিসাবে টাকা জমা রেখে বিভিন্ন ধরনের ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে খরচ দেখানো হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র বিতরণে জনপ্রতি ৫০ (পঞ্চাশ) টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি বিধির কোনো তোয়াক্কা না করে কোচিংয়ের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কৌশলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে ২ লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে সুকৌশলে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোডের্র নিয়ম ভঙ্গ করে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত একটি কোম্পানির নোট গাইড পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও পবিত্র ঈদুল ফিতরের ঈদের আগে বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা কেটে রেখে বিদ্যালয় সভাপতিকে (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ঈদ সালামি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

ঘটনার বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান দৌলতপুর সরকারি পিএস উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রে ৫০ টাকা করে নেওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, মসজিদের ইমামের বেতন বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র বিতরণের সময় ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে এড়িয়ে যান। অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস তো দেনইনি, উপরন্তু বিষয়টি হালকাভাবে উড়িয়ে দেন।  অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, একাধিক ব্যক্তি এ ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন ‘যিনি অবৈধ টাকা নেন, তিনি কি সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারেন?’

ইত্তেফাক/এমএএম