শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘ফিফা সঠিক বিচার করেনি’

আপডেট : ১১ মে ২০২৩, ১০:০১

২২ দিন পর সাংবাদমাধ্যমের সামনে আসলেন ফিফার দুই বছরের নিষেধাজ্ঞায় থাকা বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে গেলেন তিনি নির্দোষ। তার কোনো দোষ নেই। অন্য কারো দোষ আছে কি না, সেটাও তিনি বলেননি। কাউকে দোষ দেননি। সোহাগ বলেছেন, প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব আমার ওপর বর্তায়।’

গতকাল বুধবার (১০ মে) বিকালে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন সোহাগ। সেখানে আগেই সংবাদমাধ্যম কর্মীদের ভিড়ে ঘর ভরে যায়। সিনিয়র আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।

ফিফা যেসব বিষয়ে অভিযোগ এনে দুই বছরের জন্য সোহাগকে নিষিদ্ধ করেছিল সোহাগের আইনজীবী আজমালুল হোসেন বলছেন, ‘যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেসব অভিযোগে শাস্তি দেওয়া হয়নি।’ 

তিনি বলেন, ‘অর্থের অপব্যবহার হয়নি। অর্থ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তা নয়। এখানে ক্রয়ের যে প্রক্রিয়া সেটা অনুসরণ করা হয়নি। একই লোক ইনভয়েস দিয়েছে, একই লোক নাকি কোটেশন দিয়েছে। ফিফার কাছে আমরা নতুন কাগজপত্র দিয়েছি। সেটি আমলে নেয়নি। আমরা বলেছি, আপনার এসব কাগজপত্র রয়েছে। কারণ কোথায় কোনটা কেনা হয়েছে সেই কাগজ আপনার (ফিফার) লোকজনের কাছে রয়েছে। কিন্তু সেটা শুনল না। আমরা কোর্ট অব আরবিট্রেশনে যাব।’ 

এই আইনজীবী জানিয়েছেন, সোহাগকে একটা কারণে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, সেটা কেনাকাটার কাজের জন্য। এখান থেকে বেরিয়ে আসা যাবে।’

৫৫ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে এই একটা কথাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, সোহাগকে অর্থ আত্মসাতের কারণে নিষিদ্ধ করা হয়নি। অর্থের অপব্যবহার হয়নি। সোহাগ বাফুফের অর্থ সরিয়ে নেয়নি। এসব অভিযোগ নাকি সরিয়ে নিয়েছে ফিফা-দাবি সোহাগের আইনজীবীর। তিনি বলেছেন, ‘একটা অভিযোগে শাস্তি দিতে হবে তাই ন্যূনতম শাস্তি হচ্ছে দুই বছর। তারা ভুল বিচার করেছে। আমরা সেটাই প্রমাণ করব।’ কত দিন লাগবে সেই প্রশ্নে আইনজীবী আজমালুল হোসেন বলেন, ‘এটা ছয় মাস লাগতে পারে। এক বছরও লাগতে পারে।’

সোহাগ ফাঁকে ফাঁকে কথা বলেছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন ছিল সোহাগকে ঘিরে। সোহাগ জানিয়েছেন, ফিফার কাছে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে ফিরে আসব। সোহাগ বলেন, ‘আমরা অনলাইনে শুনানি করতে পারতাম। সেটা করতে গেলে এত সহজে বুঝাতে পারতাম না। ফিফা আমাদেরকে যেতে বলেনি। আমরা নিজেরাই গিয়েছিলাম সেখানে। ওদের কাছে সব কাগজপত্র রয়েছে। তারপরও আমরা দুই লাগেজ কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের কাছে প্রমাণপত্র রয়েছে।’

সোহাগ আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, ‘বুয়েটে পড়ে আমি অন্য পেশায় যাইনি। কারণ আমি ফুটবল ভালোবাসি। দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে অনেক সময় রাত পর্যন্ত কাজ করেছি।’

সোহাগের আইনজীবী জানান, ৫০ হাজার ডলার মূল্য পর্যন্ত ক্রয়ের কিছু থাকলে সেটা ফিফা দেখে দেয়। এখানে কারেন্সির গরমিল হয়েছে। ৫০ হাজার টাকার ওপরে যেসব হিসাব রয়েছে সেগুলো ৫০ হাজার ডলার ধরা হয়েছে। এখানে ভুল হয়েছে।’

আবার মাইক তুলে নিয়ে সোহাগ বলেন, ‘আমাকে অনেক কিছু মেনে চলতে হচ্ছে। কারণ কি থেকে কি বলে ফেলব। কোন কথা কীভাবে ইন্টারপ্রেট হবে। খুব বেশি বলার মতো অবস্থা নেই। অনেক বড় বড় অভিযোগ ছিল। সহজ বাংলায় বলা হয়েছে চুরি করা, অর্থের অপব্যবহার, এই অভিযোগগুলো খারিজ করে দিয়েছে ফিফা। আরো একটি হচ্ছে মালামাল ক্রয়ে মিথ্যা কাগজপত্র দাখিল করা হয়েছে। ফিফা বলেছে, ক্রয় করা মালামাল বাফুফে পেয়েছে এবং সার্ভিস এনজয় করেছে। তারা স্বীকার করেছে, বাফুফে জিনিসগুলো বাজার মূল্য থেকে বেশি দামে কেনেনি। তারা স্বীকার করেছে, যেখান থেকে বল কিনতে হবে, জার্সি কিনতে হবে, ঘাস কাটার মেশিন কিনতে হবে নির্দিষ্ট ফরোয়ার্ড ফান্ডের নিয়মের মধ্যে করেছে এবং মিস্টার সোহাগের পূর্ববর্তী ক্লিন রেকর্ড থাকার কারণে সর্বনিম্ন শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এগুলো আমার বানানো কথা না। ফিফার কাগজেই লেখা রয়েছে। আমি মনে করি, দিন শেষে সত্যটা বেরিয়ে আসবে।’

ইত্তেফাক/এসএস