পদ্মা সেতুর দুই কিলোমিটার ভাটিতে জাজিরার ছয়টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা নদীভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে নদীর তীরবর্তী গ্রাম ও ফসলি জমি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ভাঙনের কবলে পড়েছে পূর্বনাওডোবা, পালেরচর, বড়কান্দি, জাজিরা, বিলাশপুর ও কুন্ডেরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম। গত তিন বছরে ভাঙনে ঐ সব এলাকার ২ হাজার ৬৭০টি স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়েছে। নদী ১ দশমিক ৪ কিলোমিটার এলাকা ভেতরে (দক্ষিণে) প্রবেশ করেছে। সূত্র আরো জানায়, জাজিরার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের জিরোপয়েন্ট থেকে জাজিরা ইউনিয়নের পাথালিয়াকান্দি এলাকা পর্যন্ত ৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প পাউবো শরীয়তপুর কার্যালয় থেকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ১ হাজার ১৭৩ কোটি টাকার ঐ প্রকল্প প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই শেষ পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
বড়কান্দি ইউনিয়নের রঞ্জন ছৈয়ালকান্দি গ্রামটি পদ্মা নদীর তীরে। ২০২০ সাল থেকে গ্রামটি পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়ে। ঐ গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের বসতবাড়ি ও আট একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। তিনি ৫০০ মিটার দূরে নতুন করে বাড়ি নির্মাণ করেন। এখন সেই বাড়িও ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। তিনি বলেন, আমাদের পৈতৃক সম্পদ এখন পদ্মায়। গ্রামের শেষ ভাগে নতুন করে বসতি গড়েছি। এখন তাও ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগে ভাঙন রোধে নদীর তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা না হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব। বড়কান্দির মীর আলী মাদবরকান্দি গ্রামের লোকমান হোসেন বলেন, গত তিন-চার বছর যাবৎ এখানে ভাঙনের তীব্রতা বেশি। বেঁচে থাকার কৃষি জমি পদ্মার ভাঙনে হারিয়েছি। এখন বসতবাড়ি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা চাই দ্রুত ভাঙন রোধের উদ্যোগ নেওয়া হোক।
এ বিষয়ে পাউবোর শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, জাজিরায় ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার এলাকায় নদীর তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জাজিরার চারটি ইউনিয়নের অন্তত সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা পাবে। আর ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা জাজিরার আরো দুটি ইউনিয়নের ভাঙন রোধের জন্য প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হবে।