বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ধানের প্রকৃত মূল্য পাচ্ছেন না কৃষক, ফড়িয়াদের পোয়াবারো

আপডেট : ১৬ মে ২০২৩, ২১:২৭

বৃহত্তর সিলেটে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানের প্রকৃত মূল্য পাচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে ফড়িয়াদের কাছে কষ্টের ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। পরে ফড়িয়ারা এই ধান সরকারি গুদামে বিক্রি করে বিরাট মুনাফা লাভ করবে।

অথচ কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সেজন্য সরকারি খাদ্য গুদামে ‘ধান-চল ক্রয় কর্মসূচি’ শুরু হয় গত ৭ এপ্রিল। কিন্তু সিলেট বিভাগে সরকারি গুদামে ধান কেনার গতি কম হওয়ায় কৃষকরা অনেকটাই বিপাকে। অনেকেই তাদের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে কমমূল্যে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন।

জানা যায়, এবার বোরো মৌসুমে সিলেটের চার জেলায় ৩৫ হাজার ৫৩৬ মেট্রিক টন ধান ও ৪৪ হাজার ৪৫৬ মেট্রিক টন চাল মিলারদের কাছ থেকে সরকার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিভাগের ৪৭টি খাদ্য গুদামে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান ৩০ টাকা কেজি ও চাল ৪৪ টাকা কেজিতে কেনা হচ্ছে।

সিলেট বিভাগীয় খাদ্য কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন বলেন, সোমবার পর্যন্ত বিভাগে ধান কেনা হয়েছে ৩০৮ টন ও মিলারদের কাছ থেকে চাল কেনা হয় ২ হাজার ৮২৭ টন। প্রকৃত কৃষকদেরকে প্রথমে অনলাইনে আবেদনের পর লটারি হবে। লটারি যারা টিকবেন সেসব কৃষকই সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারবেন। এখন তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। শীঘ্রই ধান কেনা জোরদার করা হবে।  

কৃষি অ্যাপে আগ্রহ নেই কৃষকের

সুনামগঞ্জের সাত উপজেলায় কৃষি অ্যাপের মাধ্যমে এবার ধান কেনা হবে। তবে এই সাত উপজেলায় এখনো ধান কেনার জন্য কৃষক বাছাইয়ের কাজ শেষ হয় নি। কৃষি অ্যাপে আবেদনেও কৃষকের আগ্রহ কম। রোববার (১৪ মে) পর্যন্ত শান্তিগঞ্জ উপজেলায় কোনো কৃষকই আবেদনই করেননি। 

কৃষক মো. সাদির হোসেন বলেন, যত দ্রুত সরকারি খাদ্য গোদাম ধান কিনবে, ধানের দামও তত বাড়তে থাকবে। ধান দিতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। এজন্য ৯৫০ টাকা করে গোদামের পাশের মিলে দেড়শ মণ ধান বিক্রি করেছি। 

জামালগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, প্রকৃত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করতে সময় লাগছে। মঙ্গলবার থেকেই ধান কেনা আরও জোরদার করা হয়েছে।  ধান বিক্রি করার উপযোগী কৃষক আছেন ৩৫ হাজার। কৃষকরা পর্যায়ক্রমে আসতেই থাকবেন। কৃষকরা এবার গোদামমুখী হচ্ছেন না। অপরদিকে অনলাইনে আবেদনকে তারা ঝামেলা মনে করছেন। তাই  ১২০০ টাকার ধান ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা মণে বিক্রি করছেন। অনেক কৃষক নিবন্ধন করার পর পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন। আবেদনে দেওয়া মোবাইল নম্বরও ভুলে গেছেন। 

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা খাদ্য গোদাম কর্মকর্তা বেনু গোপাল দাস বললেন, জেলায় ১৭ হাজার ৪৮৩ টন ধান কেনা হবে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলাসহ পাঁচ উপজেলায় অনলাইনে এবং ছয় উপজেলায় সনাতন পদ্ধতিই ধান কেনা হবে। চাল কেনা হবে ৯ হাজার ৬৭৬ টন। 

সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম ভূঞা বলেন, তালিকা সংগ্রহ করে উপজেলা উপজেলায় ক্রয় কমিটির সভা করে দ্রুতই কেনা হবে ধান।

ইত্তেফাক/এবি/পিও