পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বেআইনি বাজি কারখানায় প্রবল বিস্ফোরণ, মৃত অন্ততপক্ষে ৯ জন। এগরার খাদিকুল গ্রামে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে। এখানে বিভিন্ন বাড়িতে বেআইনিভাবে বাজি বানানো হতো। সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটে। রাস্তায় মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে।
এতে প্রচুর মানুষ আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিস্ফোরণের পর একটি বাড়ি পুরোপুরি পুড়ে যায়। এখানে বেশ কয়েকটি বাড়িতে বাজি তৈরি হতো। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ দে আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ওড়িশা সীমান্ত থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। সেখানে বাজি তৈরি হচ্ছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো এলাকা ঘিরে রাখে। স্থানীয় মানুষ পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বেআইনিভাবে বাজি বানানো হতো। অভিযোগ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। পুলিশ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গত বছর কাঁথির একটি গ্রামে বিস্ফোরণ হয়েছিল। এরপর পাঁশকুড়ায় হয়। সেখানেও বাড়িতে বাজি বানানো হতো।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বিজেপি এই ঘটনার এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই বিস্ফোরণ নিয়ে প্রবল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, যে বাড়িতে বেআইনি বাজি হতো বলে অভিযোগ, তা কৃষ্ণপদ বা ভানু বাগের। তিনি তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'এগরার পুলিশের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করেই কাজ করে বেআইনি কারবার চালাত ভানু।'
পুলিশ স্বীকার করেছে, এর আগে ভানুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জামিন পাওয়ার পর সে আবার এই কাজ করতে শুরু করে। কিন্তু আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা সলিল ভট্টাচার্য।
এবিপি আনন্দকে তিনি বলেছেন, 'পুলিশ ও প্রশাসন বলে কিছু নেই এটা বোঝা যাচ্ছে। যে মাত্রায় বিস্ফোরণ হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে এটা সাধারণ বাজি নয়। দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এটা হতেই থাকবে। কাদের গাফিলতি সেটাও দেখতে হবে।'
সলিল ভট্টাচার্য যেদিকে ইঙ্গিত করেছেন, তা হলো, বাজি নয়, বোমা বানানো হচ্ছিল বলে তার মনে হচ্ছে। বাংলা আজতকের রিপোর্টে বলা হয়, স্থানীয় মানুষও জানিয়েছেন, বাজি থেকে এত বড় মাপের বিস্ফোরণ হয় না। বাজির আড়ালে বোমা তৈরি হতো।