সারা বছর জুড়ে বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ে অসংখ্য সামুদ্রিক মাছ। তার বেশির ভাগই পুষ্টিগত, গুণমান এবং বৈধতার দিকে দিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত হলেও এমন অনেক মাছ রয়েছে যা খাওয়া আইনানুগভাবে অবৈধ। যার মধ্যে অন্যতম শাপলাপাতা মাছ।
বিলুপ্তিপ্রায় এই মাছ শিকার করার বিষয়ে রয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। তবে এসব নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে আনোয়ারার হাটবাজারগুলোতে চলছে অবাধে এই শাপলাপাতা মাছ কেনাবেটার দুম।
সরেজমিনে জয়কালী হাট ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দুইটা স্পটে টুকরো টুকরো করে কেজি ধরে বিক্রি করা হচ্ছে শাপলাপাতা মাছ। ক্রেতারাও আগ্রহী হয়ে কিনে নিচ্ছেন যাচ্ছেন।
তবে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানেন না বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা।
শাপলা পাতা মাছ বিক্রেতা জহুরলাল বলেন, সাগরে মাছ ধরতে গেলে মাঝেমধ্যে অন্য মাছের সঙ্গে এই মাছটিও জালে ধরা পড়ে। মাছগুলো বেশ বড়সড় হয়। খেতেও বেশ মজাদার। তাই এই মাছটির প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে মাছ বিক্রেতা বলেন, এই মাছ ধরায় যে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা তিনি জানে না। এমনটা হলে ভবিষ্যতে তিনি এই মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবে।
জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, শাপলা পাতা মাছ মানবদেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে মাছটি এখন বিলুপ্তপ্রায়। দেশে শাপলা পাতা মাছ ধরা এবং বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এখন এই মাছ সবখানে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে নিধন চলতে থাকলে একসময় এই মাছ বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
উপজেলার সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা মো. রাশিদুল হক বলেন, শাপলা পাতা মাছটি বিলুপ্তির পথে। তাই এ মাছ ধরা এবং বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা ইতোমধ্যে এই মাছ বিক্রির বিরুদ্ধে কয়েক বার অভিযান পরিচালনা করেছি। এখনো যদি এই মাছ ধরা কিংবা বাজারে বিক্রি করা হয় তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরূদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এই মাছ বাজারজাত ও ক্রয়-বিক্রয় করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অসাধু ব্যবসায়ী ও জেলেরা যেন এই মাছ ধরা বা বাজারজাত করতে না পারে সে জন্য র্যাব ও নৌপুলিশের সমন্বয়ে বিশেষ ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হবে।