ভারতের ওডিশা রাজ্যে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৮৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৮৫০ জনেরও বেশি। তথ্য বলছে, গতকাল শুক্রবারের এ দুর্ঘটনা দেশটির ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনা। খবর বিবিসি।
ভারতের চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেসের চারটি বগি ও ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়ে পাশের রেললাইনে পড়ে ছিল, আর এই লাইন দিয়ে ইয়েশভান্তপুর-হাওরা এক্সপ্রেস যাচ্ছিল। দেশটির দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা এ তথ্য জানায়।
বিবিসি দু'জন স্থানীয় গ্রামবাসী যারা দুর্ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছিল ও একজন আহত ট্রেন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে যিনি করোমন্ডেল এক্সপ্রেসে ভ্রমণ করছিলেন।
গিরিজা শংকর রথ
‘মালবাহী ট্রেনটি অন্য লাইনে স্থির ছিল। করমন্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খায়। ওপাশ থেকে আসা ট্রেনটি ছিল শালিমার এক্সপ্রেস। এটি পেছন থেকে করমন্ডল এক্সপ্রেসকে ধাক্কা দেয়। এর দুটি কোচ লাইনচ্যুত হয়। বিকট শব্দ হল। চারদিকে ধোঁয়া ছিল।
চারদিক বিশৃঙ্খল ছিল এবং লোকেরা চারদিকে দৌড়াচ্ছিল। আমি লাইনের কাছাকাছি ছিলাম এবং ঘটনাস্থলে যাওয়ার স্বিদ্ধান্ত নেই। আমরা আটকে পড়া কয়েকজন যাত্রীকে বের করতে শুরু করি। আমরা বেঁচে থাকা কয়েকজনকে বের করতে পেরেছি এবং কিছু মরদেহ ।
অনেক আহত মানুষ ছিল, কিন্ত আমরা জানতাম না কীভাবে তাদের বের করে আনব। উদ্ধারকর্মীরা আসার পর ব্যাপারটা একটু সহজ হয়ে যায়। প্রায় সারারাত চলে এই কাজ। আমি তখনও ঘোরের মধ্যে ছিলাম।’
টুটু বিশ্বাস
‘আমরা একটি বিকট শব্দ শুনতে পেলাম। বাসা থেকে বের হয়ে দেখি বাইরে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমি দেখলাম মালবাহীট্রেন অন্য ট্রেনের ওপর উঠে গেছে।
আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি, বহু মানুষ আহত হয়েছে ,বহু মানুষ নিহত হয়েছে । একটি ছোট শিশু কাঁদছিল যার বাবা-মা সম্ভবত মারা গেছে। সেই শিশুটিও কিছুক্ষণ পর মারা যায়।
অনেকেই এখানে পানি চাইছিলেন। যতটা সম্ভব মানুষকে পানি দিয়েছি। আমাদের গ্রামের লোকজন এখানে এসে সাধ্যমতো মানুষকে সাহায্য করেছে। এটা ভয়ঙ্কর ছিল।’
মুকেশ পান্ডে
‘আমি ট্রেনে ছিলাম, প্রথমে হালকা ঝাঁকুনি অনুভব করি এবং ট্রেন লাইনচ্যুত হয়।
বজ্রপাতের মতো বিকট শব্দ হল এবং ট্রেনটি উল্টে গেল। আমি আটকা পড়ার আধা ঘণ্টা পর স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে।
আমাদের সমস্ত জিনিসপত্র বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। আমি এটির কোনটি খুঁজে পাইনি। আমি বাইরে এসে মাটিতে বসলাম। আমার গ্রাম থেকে আসা চারজন যাত্রী বেঁচে গেছে, কিন্তু অনেক লোক আহত ও নিখোঁজ রয়েছে।
আমি যে কোচে যাচ্ছিলাম তাতে অনেক লোক মারা গেছে। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে আনা হয়েছে।’