বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পরিচয় মিলেছে ১৪ জনের

বেঁচে ফেরা শ্রমিকের বর্ণনায় সিলেটের ভয়াবহ দুর্ঘটনা

আপডেট : ০৭ জুন ২০২৩, ১৩:৫৮

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত তরুণ নির্মাণশ্রমিক পল্লব আহমদ (২৫) ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি বর্ণনা দিয়েছেন ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার।

পল্লব বলেন, ঢাকার দিক থেকে আসা ট্রাকটি যখন ডান পাশে এসে আমাদের পিকআপটিকে ধাক্কা দেয়, তখন খুব জোরে শব্দ হয়। ট্রাকটি দ্রুতবেগে আসছিল। মনে হয় চালক ঘুমিয়ে ছিলেন।

হাসপাতালে হতাহত শ্রমিকদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: ফোকাস বাংলা

পল্লব আহমদ বলছিলেন, সজোরে ধাক্কা খেয়ে আমাদের পিকআপটি উল্টে যায়। আমি মাথায় আঘাত পাই। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই।

আহত পল্লব সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়ার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি সিলেট নগরের সাপ্লাই এলাকায় থাকেন।

হাসপাতাল প্রাঙ্গণে হৃদয়বিদারক দৃশ্য। ছবি: ফোকাস বাংলা

এদিকে, সিলেটে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বশেষ ১৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ঘটনাস্থলে মারা যান ১১ জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিলে আরও ৪ জন প্রাণ হারান। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নিহতদের মধ্যে ১৪ জনের পরিচয় মিলেছে। তারা সবাই নির্মাণশ্রমিক। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার বাসিন্দা।

হাসপাতালে হতাহত শ্রমিকদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: ইত্তেফাক

তারা হলেন- সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মো. সি‌জিল মিয়া (৫৫), এক‌লিম মিয়া (৫৫), হা‌রিছ মিয়া (৬৫), সৌরভ ‌মিয়া (২৭), সাজেদুর (৬০), বাদশা মিয়া (৩০), সাধু মিয়া (৫০), রশিদ মিয়া (৫০) ও মেহের (২৫); সুনামগঞ্জের শা‌ন্তিগঞ্জ উপজেলার শাহীন মিয়া (৪০), দুলাল মিয়া (২৬) ও আওলাদ হোসেন (৫০); হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের আমিনা বেগম (৪৫) এবং নেত্রকোণার বারহাট্টার আওলাদ মিয়া (৪০)।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিলেট মহানগর থেকে পিকআপভ্যানে করে প্রায় ৩০ জন নির্মাণশ্রমিক জেলার ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকার কুতুবপুর নামক স্থানে পৌঁছালে মুনশীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী বালুবাহী ট্রাকের সঙ্গে শ্রমিক বহনকারী পিকআপের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন মারা যান।

হাসপাতালে হতাহত শ্রমিকদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: ইত্তেফাক

খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ এবং সিলেট ও ওসমানীনগরের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় হতাহতদের উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে পাঠায়।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিলেটের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলেই ছুটে আসি। সকাল ৭টা পর্যন্ত ১১ জনের মৃতদেহ ও অন্তত ১০ জন গুরুতর আহতকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা আসার আগে স্থানীয়রা আরও আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইত্তেফাক/এসকে