আগের দিন জাতীয় দলের অনুশীলন দেখতে গিয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। আর গতকাল বুধবার (৭ জুন) বাফুফের সহসভাপতি এবং ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ গিয়েছিলেন হোটেলে, খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
খেলোয়াড়দের মনে করিয়ে দিলেন ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে বাংলাদেশ। বাফুফে সভাপতি যেমন বলে এসেছিলেন তোমরা খেলার আগেই হেরে যেও না। লড়াই করে হারলেও দুঃখ থাকে না। এখনো ফুটবল দর্শকের চোখে ভাসছে ২০১৭ সালে কলকাতায় রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাইয়ের খেলায় ভারতের বিপক্ষে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেও সেই ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়। বাংলাদেশ-ভারত দুর্দান্ত ম্যাচ হয়েছিল সেদিন।
বাংলাদেশের ফুটবলারদের খেলা দর্শক হৃদয় ভরে গিয়েছিল। কিন্তু কী লাভ হলো। জয়ের পথে দৌড়াতে থাকা ম্যাচটায় ড্র নিয়ে শেষ হয়েছে। সেদিন বাংলাদেশের দর্শক অভিমানে বলছিলেন, হেরে গেলেও এত আফসোস থাকত না। এমন ম্যাচের পুনরাবৃত্তি অনেক বার হয়েছে বাংলাদেশের। তাই সভাপতি সালাহউদ্দিন এবং গতকাল খেলোয়াড়দের ক্যাম্পে যাওয়া কাজী নাবিলও যেন সেই কথাগুলোই বলে গেলেন খেলোয়াড়দের কাছে। শুনছিলেন জামাল ভুঁইয়া, গোলকিপার শহিদুল আলম সোহেল, গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো, সোহেল রানা, তপু বর্মন, সুমন রেজা, বিশ্বনাথ, রহমতরা।
এখন ৩০ জন ফুটবলার আছেন নিকুঞ্জে, হোটেল রিজেন্সিতে। সেখানে আবাসিক ক্যাম্প। আর অনুশীলন হয় বসুন্ধরা কিংসের মাঠে। কাজী নাবিল প্রাথমিক ক্যাম্পের ফুটবলারদের উজ্জীবিত করলেন। তার কাছে মনে হচ্ছে খেলোয়াড়রা মোটিভেটেড। এবার সাফে কুয়েত এবং লেবানান খেলবে। নাবিলের কাছে মনে হচ্ছে, এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হবে। বলছিলেন, ‘এই প্রথম সাফের ভৌগোলিক অবস্থানের বাইরেও দুটো দল এসে খেলবে এখানে, তারা অত্যন্ত শক্তিশালী দল। কেবল আমাদের জন্যই না, সাফের অন্য সব দলের জন্যও এটা চ্যালেঞ্জ।’
খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলোচনায় নাবিল কী কথা বলেছেন সেটাই পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরে বললেন, ‘আমার মেসেজ হলো মাঠের খেলাটা ৯০ মিনিট, এই পুরোটা সময় ধরে যেন ১০০ ভাগ তারা দেয়। পুরো জাতি তাদের দিকে তাকিয়ে।’ দায়িত্ব বোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আরো বেশি দেওয়ার জন্য।’
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে কথা বলেন অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। জামাল বললেন, ‘আমরা ক্লাবে থাকলে সেখানে সভাপতি, সহসভাপতিদের দেখি না। এখানে সভাপতি, সহসভাপতিসহ সকল বোর্ড সদস্য আমাদের পেছনে আছেন। এটা গুরুত্ব বহন করে। সাফের আগে এটা দলের জন্যও বড় একটা মেন্টাল বুস্টআপ হয়।’
জামাল স্মরণ করলেন গত সাফে কীভাবে গোল হজম করেছিলেন তারা। জামাল বললেন, ‘আমরা শেষ সাফেও শেষ পাচ মিনিটে একটা গোল হজম করেছি। এটা পুরোটাই মনোযোগের ব্যাপার, ডিটেইলসের ব্যাপার। স্টুপিড গোল হজম করা যাবে না। আমাদের ভুল থেকে শিখতে হবে, আরো ভালো খেলতে হবে। সেবার আমরা দুটো ফাইনাল মিস করেছি শেষ মুহূর্তে গোল হজম করার কারণে। আমাদের মাথায় আছে প্রথমে লেবানন, এরপর মালদ্বীপ, এভাবেই। এভাবেই আমরা ভাবছি এখন। যদি পরিবর্তন হয়, তাহলে পরিকল্পনা করতে হবে আবার।’
জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা দেখছেন দেশের ফুটবল নিয়ে সাম্প্রতিক সমালোচনা কতটা বাজে পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে। হয়তো সেটাই স্মরণ করে কাবরেরা তার খেলোয়াড়দের বলেছেন, ‘খেলোয়াড়রা কঠোর পরিশ্রম করছে, তারা জানে আমাদের কাঁধে কত বড় একটা দায়িত্ব আছে, ফেডারেশন আর দেশের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসার দায়িত্ব। আমি মনে করি, খেলোয়াড়দের ভেতর সাফের জন্য বাড়তি মোটিভেশন কাজ করছে। এবার দলে বিশেষ একটা পরিবেশ দেখতে পাচ্ছি। তাতেই বুঝছি, সাফ দলের জন্য কতটা গুরুত্ব বহন করে।’