রোববার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

জাতীয় চিড়িয়াখানায় হায়েনার কামড়ে শিশুর হাত বিচ্ছিন্ন

আপডেট : ০৮ জুন ২০২৩, ২০:৪১

মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায় হায়েনার কামড়ে শিশুর হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শিশুটির নাম সাঈদ হাসান (২)। আজ বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির মায়ের দাবি, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে।

শিশুটিকে নিয়ে তার মা–বাবা চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, শিশুটির বাবা গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। স্ত্রী–মেয়েকে নিয়ে তিনি জয়দেবপুরে থাকেন। সকালে স্ত্রী ও মেয়ে ছাড়াও অন্য আত্মীয়স্বজন নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছিলেন। শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এক প্রাণীর কামড়ে এক শিশু আহত হয়েছে। বিষয়টি দেখতে আমরা চিড়িয়াখানায় অবস্থান করছি। বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।’ 

চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, আহত শিশুটি বর্তমানে জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে ভর্তি। শিশুর বাড়ি রংপুর। তারা সাভারের জিরানী বাজার এলাকায় থাকে। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করছে জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। হায়েনার নিরাপত্তা বেষ্টনী উঁচু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিশু আহত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। 

শিশুটির মামা মো. ইউসুফ জানান, গ্রামের বাড়ি থেকে স্বজনদের সঙ্গে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে গিয়েছিল শিশু সাঈদ। পরে মা শিউলী বেগমের কোল থেকে নেমে হায়েনার খাঁচার কাছে গেলে আক্রমণের শিকার হয়। 

মো. ইউসুফ বলেন, ‘গ্রামের বাড়ি থেকে আমার মা-বাবা ঢাকায় বেড়াতে এসেছে। পরে আমার বোনসহ (সাঈদের মা) আরও কয়েকজন আজ সকালে মিরপুর চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যায়। ভেতরে ঢোকার পরে সাঈদ মায়ের কোল থেকে নেমে খাঁচার কাছে গেলে হায়েনা আক্রমণ করে। সাঈদের ডান হাত খাঁচার ভেতর থেকে টেনে ধরে হায়েনা। পরে বাহির থেকে টান দিলে হাত ছিঁড়ে যায়। পরে দ্রুত পঙ্গু হাসপাতালে আনা হয়।’ 

এই ঘটনায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল উল্লেখ করে ইউসুফ বলেন, ‘যে খাঁচায় হায়েনা ছিল তার দুটি পার্ট। ভেতরের পার্টের গেট খোলা ছিল। আমার ভাগনে ছোট মানুষ, ভালো মন্দ বোঝে না। দৌড়ে খাঁচার কাছে গেছে। চিড়িয়াখানার লোকজন যদি ভালোভাবে খেয়াল রাখত তাহলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না।’ 

চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা ম্যানেজ করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চিড়িয়াখানার লোকজন নানাভাবে আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করছে। তাঁরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি বলছে, আমরা যেন কোনো কিছু না করি। হাত গেছে, এটাতো আর পাওয়া যাবে না। তাঁরা আমাদের সহযোগিতা করবে। কিন্তু আমার ভাগনেতো সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেল এর দায় কে নেবে।’

ইত্তেফাক/এসজেড