শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বর্ষার আগমনে নৌকা তৈরির ধুম, কারিগরদের ব্যস্ততা

আপডেট : ০৯ জুন ২০২৩, ১১:১৮

বর্ষার আগমনে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদী ও চলনবিলে পানি আসতে শুরু করছে। ফলে নদী ও বিল এলাকার মানুষ পারাপারের জন্য নৌকা তৈরি ও পুরোনো নৌকা মেরামতের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

জেলার যমুনা তীরবর্তী পাঁচটি উপজেলা কাজীপুর, বেলকুচি, চৌহালি, শাহজাদপুর ও সিরাজগঞ্জ সদরসহ চলনবিলের অধিকাংশ এলাকাই বন্যাপ্রবণ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ফলে বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যায় এসব এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট। এ সময় এসব এলাকায় চলাচলের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। চলনবিলের মানুষ নৌকা দিয়ে একস্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করেন। তাছাড়া যমুনা ও চলনবিলে মাছ শিকারের জন্য ছোট ছোট ডিঙি নৌকা ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই বর্ষা মৌসুম আসার আগে থেকেই নৌকা তৈরি ও মেরামতের হিড়িক পড়ে যায়।

তাড়াশের নওগাঁ হাটের নৌকা বিক্রেতা আব্দুস ছালাম বলেন, বিভিন্ন কারখানায় তৈরি করা নৌকা কিনে এনে হাটে হাটে বিক্রি করি। বন্যার সময় চলনবিলে নৌকার চাহিদা প্রচুর।

নৌকা ক্রেতা নাদোসৈয়দপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, বন্যায় নিচু সড়ক ডুবে যায়। তাই পরিবারের সদস্যদের পারাপার করার জন্য ছোট নৌকা ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। যমুনা নদীর তীরবর্তী শুভগাছা এলাকার জেলে শাহ আলী বর্ষা মৌসুমে নদীতে মাছ শিকারের জন্য ১২ হাত লম্বা একটি নতুন নৌকা তৈরি করছেন প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ করে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার দোরতা চরের হাফিজ উদ্দিন জানান, প্রতি বছরই যমুনা নদীতে পানি আসার আগেই নতুন নৌকা তৈরি ও পুরোনো নৌকা মেরামত করা হয়। নতুন একটি (৪০) হাত নৌকা তৈরি করতে দেড় দুই লাখ টাকা খরচ হয়। সময় লাগে প্রায় দুই মাস। তাই আগে থেকে নৌকা তৈরি না করলে বর্ষা এলে বিপাকে পড়তে হয়। যে কারণে নদী পাড়ের মানুষেরা বর্ষার আগেই নৌকা তৈরি করে থাকেন।

নৌকা তৈরির মিস্ত্রি বিমল কুমার সূত্রধর জানান, একটা বড় নৌকা তৈরি করতে আমাদের দেড় থেকে দুই মাস পর্যন্ত সময় লাগে। আমরা দৈনিক আট শত টাকা হাজিরায় কাজ করি। প্রতি বছর তিন-চারটি বড় নৌকা তৈরি করি। এছাড়া ছোট ও ডিঙি  নৌকা তৈরি ও বিক্রি করি।

কাজীপুর উপজেলার নাটুয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মানান্ন জানান, প্রতি বছরই যমুনা নদীর তীরবর্তী উপজেলারগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। এ সময় বাড়ি ঘরের পানি উঠায় এলাকাবাসী ভোগান্ততে পড়ে। ইউনিয়ন পরিষদের থেকে যে নৌকা দেওয়া হয় চাহিদা তুলনায় খু্‌বই কম। এই সব নৌকা দিয়ে স্থানীয় এলাকায় কোনো রকম চলাচল করা যায়। কিন্তু দূর দূরান্তে যেতে হলে ব্যক্তিগত নৌকায় ভাড়া দিয়ে চলাচলা করতে হয় স্থানীয়দের।

ইত্তেফাক/আরএজে