শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
The Daily Ittefaq

ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়: ভারতে ৯৪০ গ্রামে বিদ্যুৎ বন্ধ, ভেঙে পড়েছে বহু গাছ

আপডেট : ১৬ জুন ২০২৩, ০৯:৪৮

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের আঘাতে ভারতের গুজরাটে কমপক্ষে ২ জন নিহত ও ২২ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উপড়ে পড়েছে বহু বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছ। ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্বল হয়ে রাজস্থানের ওপর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এনডিটিভি

গুজরাটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ৫২৪টিরও বেশি গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। এর ফলে প্রায় ৯৪০টি গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের আঘাতে বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

প্রবল বাতাস, জলোচ্ছ্বাস এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অস্থায়ী আবাসন কাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং গাছ ও ডালপালা ভেঙে পড়ার বিষয়ে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ ইতিমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে।

দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিপারজয়ের তীব্রতা অতি গুরুতর থেকে গুরুতর পর্যায়ে নেমে এসেছে। ঘূর্ণিঝড়টি এখন সমুদ্র থেকে স্থলের দিকে অগ্রসর হয়েছে। আইএমডি'র ডিরেক্টর মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা ১০৫-১১৫ কিলোমিটারে নেমে এসেছে।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রাজ্যটির ভাবনগর জেলায় আটকে পড়া ছাগলকে বাঁচাতে গিয়ে এক গবাদি পশুপালক ও তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের আঘাত। ছবি: সংগৃহীত

১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আরব সাগর অতিক্রম করার পর ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় ১২৫ থেকে ১৪০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ নিয়ে গুজরাটের জাখাউ বন্দরের কাছে আঘাত হানে। তবে কয়েক ঘণ্টা পরে শক্তি হারাতে শুরু করে এটি। শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যায়।

আইএমডি'র ডিরেক্টর মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র আরও জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ায় ১৬ ও ১৭ জুন রাজস্থানে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

এর আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। মোদী বন্যপ্রাণীদের জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থার বিবরণ সম্পর্কেও জানতে চান।

গুজরাট সরকার জানিয়েছে, উপকূলীয় ও নিচু এলাকা থেকে ৯৪ হাজার মানুষকে আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়েছে।

ভারতে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের আঘাত। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের রেল পশ্চিম বিভাগ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত গুজরাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বা সেখানে থাকা প্রায় ৯৯টি ট্রেনের যাত্রা বন্ধ থাকবে।

ভারতীয় জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ১৮টি দল, রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) ১২টি দল, রাজ্য সড়ক ও নির্মাণ বিভাগের ১১৫টি দল এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বিভাগের ৩৯৭টি দল উপকূলীয় জেলাগুলোতে মাঠে রয়েছে।

শনিবার (১৭ জুন) পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে, বন্দরগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে এবং জাহাজগুলো নোঙর করা হয়েছে। গুজরাটের জামনগর বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

ইত্তেফাক/এসকে