বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ১৫ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

অর্থনীতি ও পরিবেশ উন্নয়নে আলাদা পরিকল্পনার তাগিদ

আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ২১:৫৯

ইত্তেফাক রিপোর্ট

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় পরিচালিত ত্রাণ কর্মসূচির পরিচালন ব্যয় এবং প্রাপ্ত তহবিলের স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুশীল সমাজ। অর্থনীতি এবং পরিবেশ উন্নয়নে আলাদা পরিকল্পনার সুপারিশ করেছেন তারা। গতকাল শনিবার সিরডাপ মিলনায়তনে কোস্ট ট্রাস্ট আয়োজিত ‘ইন্টিগ্রেশন অব গ্রান্ড বারগেইন কমিটমেন্টস এন্ড লোকালাইজেশন: এইড ট্রান্সপারেন্সি এন্ড সলিডারিটি এপ্রোচ’ শীর্ষক আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই সভায় রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় গৃহীতব্য জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি) ২০১৯-এ কক্সবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি এবং পরিবেশের উন্নয়নে মানবিক এবং উন্নয়ন কর্মসূচির পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়। আলোচনা সভায় বাংলাদেশে স্থানীয়করণের উপর একটি সমীক্ষার ফলও তুলে ধরা হয়।

সাবেক মুখ্য সচিব এবং পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ উইংয়ের মহাপরিচালক নাহিদা সোবহান, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সাপো, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর বাংলাদেশ প্রধান জর্জ জিওগারি, ইউএনএইচসিআর-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি পাপা কাইসমা সিলা, অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি এবং গ্লোবাল লোকালাইজেশন ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য অনিতা কাট্টাখুজি, কক্সবাজার সিএসও এন্ড এনজিও ফোরামের কো-চেয়ার আবু মুর্শেদ চৌধুরী, এডাবের পরিচালক জসিম উদ্দীন, ডিজাস্টার ফোরামের গওহর নঈম ওয়ারা এবং কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর একেএম মুশা। কোস্ট ট্রাস্টের রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন একই সংস্থার মো. মজিবুল হক মনির। অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা সংকটের ফলে স্থানীয়দের বিভিন্ন সমস্যার কথা ভিডিও প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।

আব্দুল করিম বলেন, নিরাপদ প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষায় আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। কক্সবাজার জেলায় পরিবেশ, শিক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার, আইএনজিও এবং জাতিসংঘ মিলে একটি মানবিক ও উন্নয়ন বিষয়ক সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

আবু মুর্শেদ চৌধুরী রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দের মোট ২৫ শতাংশ স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে বিতরণে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জাতিসংঘের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি) ২০১৯ এ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার সুপারিশ করেন।

নাহিদা সোবহান বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য টেকসই, নিরাপদ এবং স্বচ্ছতা প্রত্যাবাসন। এই মানবিক সংকটে বৃহত্তর সমন্বয় খুব প্রয়োজন। স্থানীয় এনজিওদের এই সমন্বয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ করতে হবে।

মিয়া সাপ্পো বলেন, উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে আমাদের আশাব্যঞ্জক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাপা কাইসমা সিলা বলেন, কক্সবাজারের জনগণের উপর থেকে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা কমিয়ে আনা আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। নিরাপদ এবং টেকসই প্রত্যাবাসনই এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরী সমাধান।

মুজিবুল হক মনির বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘ অঙ্গসংস্থাগুলো এই পর্যন্ত যে ৬৮২ মিলিয়ন ডলার তহবিল পেয়েছে, তাতে প্রতিটি রোহিঙ্গার জন্য মাথাপিছু প্রায় ৫৭ হাজার টাকা এসেছে। এই তহবিলের কত অংশ রোহিঙ্গাদের জন্য আর কত অংশ সংস্থাগুলোর প্রধান কার্যালয় বা মাঠ পর্যায়ে তাদের পরিচালন ব্যয় বাবদ খরচ হয়েছে এই বিষয়েও তথ্য প্রকাশ করা উচিত।