বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংস্কৃতিকর্মীদের সংঘবদ্ধ হয়ে ওঠার প্রেরণা'

আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৩, ১৯:২০

বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আহ্কাম উল্লাহ্ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংস্কৃতিকর্মীদের সংঘবদ্ধ হয়ে ওঠার প্রেরণা। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় শুক্রবার (২৮ জুলাই) সারাদেশ থেকে আসা সংস্কৃতিকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি মন্তব্য করেছেন। 

আহ্কাম উল্লাহ্ বলেন, বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সংস্কৃতিকর্মীদের নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের যুথবদ্ধ পথচলা অব্যাহত থাকলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শোষণ-বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ হবে। নারী-পুরুষের সমঅধিকারসহ সমাজের সব স্তরের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংস্কৃতিকর্মীদের কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহ্কাম উল্লাহ্ জটিল ও সফল অস্ত্রোপচার পরবর্তী কর্মী সম্মলনে সারাদেশ থেকে আবৃত্তিশিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, ও সংস্কৃতিজনেরা অংশ নেন। তারা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য আহ্কাম উল্লাহকে সংবর্ধনা ও শুভ কামনা জানান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখি, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ গিয়াস, বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজারুল ইসলাম সুইট প্রমুখ।

 

বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে আহ্কাম উল্লাহ্ সব সময় সরব আছেন। তিনি অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে চলেছেন। কাজের মধ্য দিয়ে আহ্কাম উল্লাহ্ দেশের অগ্রগণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। তার সুস্থতা সাংস্কৃতিকর্মীদের জন্য আনন্দের। 

অনুষ্ঠানে 'আগামীর বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চাই' এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা মূলক আলোচনা করেন বক্তারা। আলোচনা শেষে সারাদেশ থেকে আসা কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং আগামী দিনের কর্মসূচীর দিক নির্দেশনা প্রদান করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক আজহারুল হক আজাদ। 

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে চৌকস ও সাহসী নেতৃত্বের জন্য ছাত্রজীবন থেকেই আহ্কাম উল্লাহ্ পরিচিত লাভ করেন। ২০০২ সালে ছায়ানটের ভবন নির্মাণে তহবিল সংগ্রহের জন্য রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করার সময় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার পরিচালিত অপারেশন ক্লিন হার্টের আওতায় যৌথবাহিনী তাকে আটক করে। আটকের পর নির্যাতনের শিকার হয়ে আহ্কাম উল্লাহ্'র ঘাড়ের হাড় ভেঙে যায় এবং মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এর জের ধরে দিন দিন তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। শারীরিক অবস্থা বর্তমানে গুরুতর হয়ে উঠলে চিকিৎসকদের পরামর্শে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে ১৯শে জুন তার গলা ও ঘাড়ে জটিল অস্ত্রোপচার করা হয়। সফল অস্ত্রোপচার শেষে দেশে ফেরেন আহ্কাম উল্লাহ্।

ইত্তেফাক/জেডএইচ