গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম পদে লোক নিয়োগে অনিয়ম এবং দুর্নীতি অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২০ আগস্ট) নিয়োগ কমিটির সদস্য ও বনগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল কাইয়ুম হুদা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি এই মডেল মসজিদের জন্য একজন পেশ ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন ও দুইজন খাদেম নিয়োগ করা হয়। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি কোথাও প্রচার করা হয়নি। শুধু সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে প্রচার করা হয়। যা ছিল অস্পষ্ট। সাধারণত যেকোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার বা প্রকাশের পর আবেদন গ্রহণের জন্য ১৫ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন গ্রহণের জন্য মাত্র ৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া দেশের অন্যান্য মডেল মসজিদে পেশ ইমাম নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর নির্ধারণ করা হলেও সাদুল্লাপুরে বয়স ৩০ থেকে ৪৫ বছর হতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এর ফলে ৩০ বছরের নীচে অনেক যোগ্য প্রার্থী এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পান নাই। অপরদিকে আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতায় তৃতীয় বিভাগ না থাকা সত্ত্বেও তৃতীয় বিভাগ দেখিয়ে আবেদনপত্র বাতিলও করা হয়।
নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে এই মসজিদে নামাজ শুরু করার নির্দেশনা থাকায় তড়িঘড়ি করে এই লোক নিয়োগ সম্পাদন করা হয়। ইমাম পদে ৭টি, মুয়াজ্জিন পদে ৭টি ও খাদিম পদে ৩টি আবেদন পত্র জমা হয়। এরমধ্যে বয়স কম থাকায় ইমাম পদে ২টি, শিক্ষাগত যোগ্যতায় তৃতীয় বিভাগ থাকায় মুয়াজ্জিন পদে ৩টি আবেদন বাতিল করা হয়।
ইমাম পদে আবেদনকারী মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, পেশ ইমাম পদে আবেদনের সময় তার বয়স ছিল প্রায় ২৯ বছর। এ কারণে তার আবেদন বাতিল করা হয়। অথচ দেশের অন্যান্য এলাকায় মডেল মসজিদের ইমাম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বয়সসীমা শুধু অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর উল্লেখ ছিল।
মুয়াজ্জিন পদে আবেদনকারী মো. শফিউল ইসলাম বলেন, দাখিল ও আলিমে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেছি। অথচ দাখিল ও আলিমে তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ দেখিয়ে আবেদন পত্র বাতিল করা হয়েছে।
নিয়োগ কমিটির সদস্য ও বনগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল কাইয়ুম হুদা বলেন, গত ১৩ এপ্রিল তৎকালীন ইউএনও মোছা. রোকসানা বেগম ইমামসহ অন্যান্য পদে লোক নিয়োগ করা হবে বলে একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নেন। এ সময় তিনি আমাকে বলেন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পাদনের দিন তারিখ আপনাকে পরে জানানো হবে। কিন্তু পরে আর জানানো হয়নি। পরে এই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বঞ্চিত প্রার্থীদের থেকে জানতে পারি অতি দ্রুত নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়।
তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রোকছানা বেগম বলেন, বিধি মোতাবেক এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে মুয়াজ্জিন পদে আবেদনকারী মো. শফিউল ইসলামের আবেদনপত্র দাখিল ও আলিমে তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ দেখিয়ে কেন বাতিল করা হল এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এই বিষয়টি জানা নেই।