রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

অসন্তোষ তৃণমূল আওয়ামী লীগ

আলোচনা সভায় যাওয়া ঠেকাতে সাবেক সাংসদের সমর্থকের কৌশলী কাণ্ড

আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০৪

বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর আওয়ামী লীগ। আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে লোকজনের আগমন ঠেকাতে কৌশলে হুমকি দিয়ে বাজারের সকল দোকান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে।   

জানা যায়, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার (৩০ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর আওয়ামী লীগ। এরই সূত্র ধরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে লোকজনকে যেতে বাধা দেওয়ার জন্য আগের দিন রাতে বিলাশপুরের শাহ আলম মাদবর ও তার লোকজন বিলাশপুর বাজার, সফি কাজীর মোড় ও মহরখার কান্দির দোকানদারদের হুমকি দেয় অনুষ্ঠানের দিন যেন কেউ দোকান না খুলে। তাই ভয়ে অনুষ্ঠান চলাকালে কোন দোকানদার দোকান খুলেনি এমন অভিযোগ রয়েছে। এদিকে দোকানপাট বন্ধ থাকার ফলে সমাবেশে আসা লোকজনদের ভোগান্তিতে পরতে হয়।

এসময় বিলাশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারীর সভাপতিত্বে জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আনোয়ার মোল্লার সঞ্চালনায় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু। 

এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শাহ আলম মাদবরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সমর্থকদের এমন ঘটনার বিষয় জানতে একাধিকবার সাবেক সাংসদ বি এম মোজাম্মেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে বিলাশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারি জানান, আজকের প্রোগ্রামে যাতে সফল না হতে পারে তার জন্য বিলাশপুর বাজার, মহরখার কান্দি, সফি কাজীর মোড়ের দোকানগুলো পরিকল্পনা করে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এমনকি সভাস্থলের পাশে একটা টিউবওয়েলের উপরের অংশ খুলে রাখা হয়েছে যেন মানুষ পানি না খেতে পারে।

জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌকিদার বলেন, এই আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদের লোকজন দোকানপাট বন্ধ করে রেখেছিলো।

এসময় শোক দিবসের আলোচনা সভায় আগত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে এ বিষয়ে সমালোচনা করে বক্তব্য প্রদান করেন।
  
আলোচনা সভায় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য শরীয়তপুর- ১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু বলেন, আমি হিংসার রাজনীতি পছন্দ করি না। আজকে বিলাশপুরে আমি এবং আমরা মেহমান, আপনাদের উচিৎ ছিলো আমাদের মেহমানদারী করা কারণ আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক এবং ১৫ আগস্টের শোক দিবসের আলোচনা সভা। আপনার উচিৎ হয়নি বিলাশপুর, মহরখার কান্দি, সফিকাজীর মোরের দোকানপাট বন্ধ করা। নমিনেশন যে কেউ পেতে পারে এবং আপনিও পেতে পারেন, নমিনেশন যে পাবে আমরা তার পক্ষেই নির্বাচন করে নৌকাকে বিজয়ী করবো। আমি শোক দিবসের প্রতিটি আলোচনা সভায় একটা কথাই বলেছি যে, নৌকার একমাত্র মাঝি শেখ হাসিনা। সুতরাং তিনি যাকে নমিনেশন দিবে আমরা তার পক্ষে কাজ করবো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক সংসদ সদস্য মাস্টার মজিবুর রহমান, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ্ব ইদ্রিস ফরাজী, জাজিরা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোবারক আলী শিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাষ্টার জিএম নুরুল হক, সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌকিদার জাজিরা পৌরসভার মেয়র ইদ্রিস মাদবর, জাজিরা পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক আব্দুল হক কবিরাজ, জাজিরা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভীন আক্তার, আওয়ামী লীগ নেতা ইলিয়াস উজ জামান, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সেলিম মাদবরসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ইত্তেফাক/এমএএম