হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় তিত বেগুন গাছের টমেটো গ্রাফটিং করে সাড়া জাগিয়েছেন মাহিনুর বেগম। গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করছেন এবং এলাকার আরো ১০ নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন তিনি।
সম্প্রতি মাধবপুর কৃষিবিভাগ থেকে মাহিনুর বেগম মিতু পেয়েছেন সফল নারীর পুরস্কার। মাধবপুরের চৌমুহনী ইউনিয়নের বানিয়া পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাহিনুর বেগম মিতু নিজেদের বাড়ির আঙ্গিনা ও পাশের জমিতে গড়ে তুলেছেন টমেটো চারা গ্রাফটিং নার্সারি।
মাহিনুর বেগম মিতু জানান তিনি সিলেট এমসি কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এমএ পাস করেন। এরপর চাকরির পেছনে ঘুরে সময় নষ্ট না করে নিজেই তিত বেগুন গাছে টমেটোর চারা গ্রাফটিং শুরু করেন। পত্রিকা ও ইউটিউব দেখে প্রথমে অল্প পরিসরে কাজ শুরু করলেও বর্তমানে তার এখানে ১০-১২ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন।
প্রতি বছর চৈত্র মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত চলে চারা গ্রাফটিং এর কাজ। এ সময়ে ৫ লাখেরও বেশি চারা গ্রাফটিং করেন মিতু। প্রতিটি চারা ৬ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হয়। চারা গ্রাফটিং এরপর নিবিড় পরিচর্যায় ৪-৫ দিন রাখার পর অন্য বেডে স্থানান্তর করতে হয়। পরিশ্রম ও সময়মত সঠিক পরিচর্যা করলে এ ব্যবসায় অধিক লাভবান হওয়া যায় বলে জানায় মাহিনুর বেগম মিতু।
গ্রাফটিং ব্যবসা করে মিতু মাসে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করে নিজে হয়েছেন স্বাবলম্বী। পাশাপাশি এলাকার অন্য নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। মাহিনুর বেগম মিতু কৃষি বিভাগের আইপি এম থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং কৃষিবিভাগ থেকে পুরস্কার পেয়েছেন। তিত বেগুন গাছে টমেটো গাছের গ্রাফটিং করলে ছত্রাক ও ঢলে পড়া রোগ হয় না। এ কারণে টমেটোর গ্রাফটিং চারার দাম বেশি হয় এবং বেশি ফলন পেয়ে চাষীরা লাভবান হচ্ছেন। ইদানীং মাধবপুরে অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক আধুনিক পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে অধিক লাভবান ও সফল আত্মকর্মী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান জানান, মাধবপুরের ধর্মঘর, চৌমুহনী, বহরা, শাহজাহানপুর, জগদীশপুর ও ছাতিয়াইন ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ হয়। মাহিনুর বেগম আমাদের ইউনিয়নের গর্ব। তিনি এখন গ্রামের নারীদের কাছে রোল মডেল হয়ে উঠেছেন।