বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

মা হলেন চতুর্থ শ্রেণির সেই শিশুটি: নাম রাখা হলো ‘আলো’

আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:৩৭

ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির শিশুটির গর্ভে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানের নাম রাখা হয়েছে ‘আলো’। গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে নবজাতকের এই নামটি রাখেন। একইসঙ্গে নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে মা ও নবজাতকের জন্য পুষ্টিকর খাবার এবং নতুন জামা-কাপড় দেওয়া হয়। 

এ সময় প্রসূতি শিশুর চাচি ও দাদি উপস্থিত ছিলেন। এর আগে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর বারটার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নবজাতকটির জন্ম দেয় ১১ বছরের চতুর্থ শ্রেণির এক শিশু। 

জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নার্গিস তানিমা ফেরদৌস ও এ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ফেরদৌস রহমানসহ ছয় সদস্যের চিকিৎসক টিম শিশুটির সিজারিয়ান অপারেশন করেন।

গুরুদাসপুরের ইউএনও শ্রাবণী রায়ের কোলো নবজাতক ‘আলো’। ছবি: ইত্তেফাক
 
গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নার্গিস তানিমা ফেরদৌস ইত্তেফাককে বলেন, অপারেশন পরবর্তী সময়ে দুজনেই সুস্থ্য রয়েছে। চার পাঁচ দিন হাসপাতালে ভর্তি রাখার পর ছুটি দেওয়া হবে মা ও নবজাতককে।

নবজাতককে কোলে নিয়ে শিশুটির চাচি অভিযোগ করেন, নবজাতক জন্ম নিয়েছে ঠিকই, তবে পরিচয় নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। পিতা-মাতা হারা শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছিল প্রতিবেশি দাদা জাহিদুল খাঁ (৫৫)। জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হলেও বিচার পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে পরিবারে। কারণ জাহিদুল গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে হুমকি দিচ্ছে তার স্বজনেরা।

এর আগে ২৩ আগস্ট ইত্তেফাকে ‘চতুর্থ শ্রেণির শিশুটি এখন দশ মাসের অন্তঃসত্ত্বা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে প্রশাসনের। তার ৩ দিনের মাথায় র‌্যাবের অভিযানে ধর্ষক জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্ষক জাহিদুল খাঁ গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের কালু খাঁর ছেলে। 

পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণের শিকার শিশুর দাদির মামলায় সম্প্রতি ধর্ষক জাহিদুল খাঁকে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে ধর্ষক জাহিদুল কারাগারে আছেন।

শিশুটির পরিবার জানায়, গত বছরের নভেম্বর মাসে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হলেও শিশুটির দাদি বাদী হয়ে ১৮ জুন ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরদিন ১৯ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৬৪ ধারায় শিশুটির জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত। 

মামলার বাদী শিশুটির দাদি জানান, এখন তারা ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রবাণী রায় ইত্তেফাককে বলেন, মা ও নবজাতক দুজনেই নিষ্পাপ। যে ব্যক্তি ঘটনা ঘটিয়েছেন তার বিচার শুরু হয়েছে। মা ও নবজাতককে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তা করা হচ্ছে।

ইত্তেফাক/পিও