হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমস হাউজের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি সোনা গায়েবের মামলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আকরাম হোসেন।
তিনি বলেন, বিমানবন্দর থানা থেকে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছি।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ডিএমপির উত্তরা বিভাগের বিমানবন্দর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের নির্দেশে ডিবিকে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে ডিবি এটি তদন্ত করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সোনা চুরির এই ঘটনা ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে আসে গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর)। বিষয়টি জানাজানি হয় পরদিন রোববার। এ ঘটনায় চার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করে মামলার কথা জানালেও মামলা হয়েছে অজ্ঞাতদের আসামি করে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।
এদিকে পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য কাস্টমসের যুগ্ম-কমিশনার মিনহাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে কাস্টমস হাউজ। বিমানবন্দরের কাস্টমস হাউসের নিজস্ব গুদামে দিনভর ইনভেন্টরি শেষে ৫৫ কেজি সোনা চুরি হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
২ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও গুদামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বিমানবন্দরের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড শাখার কাছে শুল্ক বিভাগের গুদামের মূল্যবান পণ্যসামগ্রী রাখার একটি স্টিলের আলমারির লক ভাঙা বলে জানান। এর আগেও একাধিকবার কাস্টমসের গুদাম থেকে সোনা, মোবাইল ফোন, মেমোরি কার্ডসহ বিভিন্ন মূল্যবান মালামাল চুরি হয়েছে। এ নিয়ে একাধিক মামলাও হয়। সাধারণত যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করা সোনাসহ মূল্যবান জিনিস কাস্টমসের গুদামে রাখা হয়। গুদামে রক্ষিত সোনার হিসাব মেলাতে গিয়েই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।
শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টা থেকে পরদিন রোববার সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে কে বা কারা গুদামের আলমারির লকার ভেঙে সোনাগুলো নিয়ে যায় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। শুল্ক বিভাগ বলছে, চুরি হওয়া সোনার মূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। বিমানবন্দরের সূত্র বলছে, উধাও হওয়া সোনার বার ও অলঙ্কার মিলিয়ে প্রায় ৫৫ কেজি সোনা কাস্টমসের গুদামের একটি আলমারিতে বাক্সের মধ্যে সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু আলমারি ভেঙে সেই বাক্সটিই চুরি হয়ে গেছে। গুদামে কাস্টমসের কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কারও প্রবেশের সুযোগ নেই, তাই কাস্টমসের কেউ এটা করেছে।