বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৯ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথির ইতিহাস ও তাৎপর্য

আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৪১

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রাচীন ধর্মীয় উৎসব জন্মাষ্টমী বা কৃষ্ণ-জন্মাষ্টমী। এটি পালিত হয় বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণের জন্মদিন হিসেবে। এর অপর নাম কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী।

হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন পালিত হয় এ জন্মাষ্টমী। উৎসবটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি বছর মধ্য আগস্ট থেকে মধ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো এক সময়ে পড়ে।

কৃষ্ণানুসারীদের মতে এবং সংখ্যাতত্ত্ববিদদের ধারনায়, খ্রিষ্টপূর্ব ৩ হাজার ২২৮ অব্দে শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন, তবে তার জন্মতিথি নিয়ে মতান্তরও আছে। মতান্তর যাই থাক না কেন, শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তার ভক্তদের কাছে ‘জন্মাষ্টমী’ নামে যুগ যুগ ধরে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।

দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথির রোহিণী নক্ষত্রে বাসুদেব-দেবকীর কোলে কংসের কারাগারে জন্মগ্রহণ করেন শ্রীকৃষ্ণ। অষ্টমী তিথিতে দেবকীর অষ্টম গর্ভে আবির্ভূত হয়েছিলেন বলে এই জন্মতিথির নাম জন্মাষ্টমী তিথি। শ্রীকৃষ্ণ কংসের কারাগারে যখন আবির্ভূত হয়েছিলেন তখন দুরাচারী কংসের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সবাই। পৃথিবী থেকে দুরাচারী দুষ্টদের দমন আর সজ্জনদের রক্ষার জন্যই তাদের মহাবতার এই দিনে পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন। পাশবিক শক্তি যখন সত্য, সুন্দর ও পবিত্রতাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই অসুন্দরকে দমন করে জাতিকে রক্ষা এবং শুভশক্তিকে প্রতিষ্ঠার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে।

জন্মাষ্টমী পরমাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেই শুভ আবির্ভাব তিথি। বিশ্বব্যাপি সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীদের কাছে এই তিথির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম, সমাজ, রাজনীতি- এক কথায় জীবনাচরণের ক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম এক আলোড়ন সৃষ্টিকারী যুগান্তকারী ঘটনা। নিরাকার পরব্রহ্ম ভগবানের সাকার রক্তমাংসের দেহধারী প্রকাশ সুগভীর তাৎপর্য ও গুরুত্ব বহন করে। ন্যায়ের পক্ষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য কর্ম করেছেন অনেক। দিয়ে গেছেন ভবিষ্যতের সত্য, সুন্দর ও আলোর পথে চলার নির্দেশনা।

ন্যায়ের পক্ষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য কর্ম করেছেন অনেক। শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি আমাদের সৌভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বন্ধনে বিশ্ব-সমাজকে আবদ্ধ করার ক্ষেত্রে শুভশক্তিকে জাগ্রত করে সত্য, সুন্দর ও আলোর পথে চলার নির্দেশনা দিয়ে থাকে।

ইত্তেফাক/এসকে

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন