শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

মাসোহারা না দেওয়ায় জেলেকে গুলি, স্মার্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:০১

মাসোহারার টাকা না দিয়ে পালানোর সময় বলেশ্বর নদ সংলগ্ন সুন্দরবনের কচিখালী-কটকা এলাকায় স্মার্ট বাহিনীর গুলিতে জয়নাল মাঝি  (৩০) নামে এক জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের পাথরঘাটা স্টেশন বিষয়টি নিশ্চিত করে। 

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোররাত তিনটার দিকে সুন্দরবনের কচিখালী-কটকা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

আহত জেলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সদর পাথরঘাটা ইউনিয়নর রুহিতা গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুর রশিদ। জয়নালের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে স্থানান্তর করা হয়।

আহত জয়নাল  জানান, বলেশ্বর নদসংলগ্ন সুন্দরবনের কচিখালী-কটকা এলাকায় মাছ ধরতে মাসোহারা দিতে হয় বন বিভাগের স্মার্ট বাহিনীকে। চলতি মাসের টাকা না দেওয়ায় স্মার্ট বাহিনীর (টহল টিম) তাদের ধাওয়া করে। এ সময় তারা দ্রুত ট্রলারটি চালিয়ে যাওয়ার সময় স্মার্ট বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি করলে তার ডান হাতে গুলি লাগে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। 

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুবাইয়াত আলী বলেন, জয়নালের হাতে গুলি রয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে জানান, আগে জলদস্যুদের বছরে একবার টাকা দিলে নিরাপদে মাছ শিকার করা যেত। এখন সরকারের তৈরি স্মার্ট বাহিনীকে প্রতি মাসে ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার করে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী  জানান, সুন্দরবন এলাকায় মাছ ধরতে হলে স্মার্ট বাহিনীকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে জেলেদের ট্রলার আটকে রেখে নির্যাতন করে। বিষয়টি নিয়ে আমি জেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় উপস্থাপন করেছি।

পাথরঘাটা থানার তদন্ত ওসি সাইফুজ্জামান বলেন, এক জেলে বন বিভাগের স্মার্ট বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে এমন খবর শুনেছি। তবে আমরা হাসপাতালে যাওয়ার আগেই তাকে বরিশালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয় বন বিভাগের কচিখালী বিট কর্মকর্তা আব্দুস ছবুরকে মুঠোফোন কল করা হলে এ বিষয়ে স্যারের সঙ্গে কথা বলতে বলে সংযোগ কেটে দেয়। পরবর্তীতে তার সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করতে গেলে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ইত্তেফাক/পিও