শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

তাহিরপুরের তিন শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা চুনাপাথর পরিবহন বন্ধ

নদীপথে বেপরোয়া চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি

আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:১৫

সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্ত এলাকা তাহিরপুরের তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছেন আমদানীকরকেরা। নদীপথে বেপরোয়া চাঁদাবাজির কারণে তারা কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহন করবেন না। তারা বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। এর বিহিত না হওয়া পর্যন্ত পরিবহন বন্ধ থাকবে।’ ভারত থেকে কয়লা ও চুনাপাথর তাহিরপুরের পাটলাই নদী দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। কিন্তু এসব মাল পরিবহন হচ্ছে না গত শনিবার থেকে।

বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি করা কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহনের জন্য পাটলাই নদী ছাড়া বিকল্প পথও নেই। পরিবহন বন্ধ থাকায় স্বাভাবিকভাবে আমদানি কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ঐ তিন শুল্ক স্টেশনে কোনো কর্মচাঞ্চল্য নেই। ফলে কয়েক হাজার শ্রমিক তাদের পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের অভিযোগ :নৌপথে কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহনকালে টোল আদায়ের নামে প্রতিদিন ৩-৪ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে। তারা জানান, এই চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওসির কাছে তারা স্মারকলিপি দিয়েছেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, তাহিরপুরের বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা কয়লা দিয়ে দেশের সিংহভাগ চাহিদা পূরণ হয়। ঐ তিন শুল্ক স্টেশন দিয়ে নৌপথে বড় বাল্কহেড ও স্টিলের নৌকায় পাটলাই নদী দিয়ে পরিবহন করা হয় কয়লা। নৌপথ ছাড়া এখান থেকে কয়লা পরিবহনের বিকল্প পথ নেই। এই সুযোগে পাঁচ মাস ধরে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের পাটলাই নদীর ডাম্পের বাজার ও শ্রীপুর বাজারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাস আদায় এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নামে প্রতিটি নৌযান থেকে টোল আদায় করা হয়। এই টোলের রসিদও অনেক সময় দেওয়া হয় না। একেকটি নৌকা থেকে খাস আদায়ের নামে ১০-১৫ হাজার এবং বিআইডব্লিউটিএর নামে ২০- ৫০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। টাকা না দিলে নৌকা আটকে  মারধর করা হয় শ্রমিকদের।

আমদানিকারকেরা বলেন, তাহিরপুরের তিনটি শুল্ক স্টেশনে ৭০০ জন কয়লা ও চুনাপাথর আমদানিকারক রয়েছেন। কাজ করেন প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক।            

এই চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসায়ীরা তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি অনেকটা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এলাকার শ্রমিকেরা।

তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার বলেন, নানা কারণে আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা বিপাকে রয়েছেন। এর মধ্যে কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহনে বাড়তি টাকা দেওয়ার যন্ত্রণায় সবাই অতিষ্ঠ। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, কয়লাবোঝাই নৌকা থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের একটা অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

ইত্তেফাক/এসটিএম