শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

সিলেটে বিভিন্ন সীমান্তপথে বেপরোয়া চোরাচালান

আসছে চিনি, গরু মহিষ, চা-পাতা কিংবা মাদকদ্রব্য

আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:০০

সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সীমান্তে চোরাচালানি চক্র বেপরোয়াভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ইদানীং এলাকার কোনো কোনো ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি দ্রুত ‘বড়লোক’  হওয়ার স্বপ্নে বিনিয়োগ করছেন চোরাচালানসহ মাদকের কারবারে। তাদের বিনিয়োগে সীমান্তের ওপার থেকে চিনি, গরু, মহিষ, চা-পাতা, ইয়াবাসহ নানা ধরনের মাদক আসছে দেদারছে। ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনের সঙ্গে পুরোনো মোবাইলও আসছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুরে ২৯৭টি ভারতীয় মোবাইল ফোন সেট, একটি প্রাইভেটকারসহ ইউসুফ আলী নামের একজনকে আটক করা হয়।

সিলেট জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. সম্রাট তালুকদার ইত্তেফাককে বলেন, ধরাপড়া চোরাচালানিদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়ে পুলিশ এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তিনি জানান, গত আগস্ট মাসে সিলেট জেলায় এক কোটি ৮৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা মূল্যের চোরাই পণ্য আটক করেছে পুলিশ।

সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় চিনি পাচার হয়ে আসছে বেশি। সেই সঙ্গে মাদকসহ অন্যান্য পণ্যও আসছে। মাদকের মারণনেশা ও সহজলভ্যতার কারণে স্কুল ও কলেজগামী তরুণরাই বেশি ঝুঁকছে মাদকের প্রতি। সচেতন মহল মনে করেন সীমান্তে আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। অন্যদিকে, পুলিশ জানায়, চলতি মাসে জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে আসা ভারতীয় ১৭টি গরু, ১৫টি মহিষ, ৫০ কেজি চিনি ও গোয়াইনঘাটে জাফলং রাধানগর বাজারে ২২৪ বস্তা চিনিসহ দুই জনকে  আটক করা হয়। এসব চোরাইপণ্যের মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। গত মাসে পর্যটন এলাকা কোম্পানীগঞ্জে ১৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার অফিসার্স চয়েজ মদ, নাসির বিড়ি, ফেনসিডিল আটক করে পুলিশ। সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে শক্তিশালীচক্র নির্বিঘ্নে মাদকসহ চোরাইপণ্য নিয়ে আসছে। চোরাইপণ্য বহনকারীরা মাঝে মধ্যে ধরা পড়লেও মূল হোতারা পর্দার আড়ালেই থেকে যাচ্ছে।

সিলেট শহরে বড় দুটি চালান ধরা পড়েছে, অভিভাবক মহল উদ্বিগ্ন:

গত ৩ সেপ্টেম্বর মহানগরীর বটেশ্বর এলাকা থেকে সাড়ে ৫ হাজার পিসের ইয়াবার চালানসহ রায়হান উদ্দিন নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশ। চালানটি  জকিগঞ্জ থেকেই নিয়ে আসছিল রায়হান। সূত্র জানায়, জকিগঞ্জ এখন মাদকের বড় রুটে পরিণত হয়েছে। রায়হান একজন বাহক। তবে এই চালানের মূলহোতা এখনো অধরা। এর আগে ৩০ আগস্ট নগরীর আম্বরখানা পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে তিন মাদক কারবারিকে পুলিশ আটক করে  তাদের কাছ থেকে ৬ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।

মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, সাম্প্রতিক ইয়াবার চালানসহ আটককৃতদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। সূত্র জানায়, মিয়ানমার থেকে ভারত হয়ে আসা মাদকের চালান দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জকিগঞ্জে সীমান্ত এলাকা দিয়ে আসছে। সূত্র জানায়, মিয়ানমারের মান্দালে-সাগাইং-মনেয়া ও কালে অঞ্চল হয়ে ইয়াবার চালান ঢুকত ভারতে। এরপর ভারতের মণিপুরের মোরে-মিজোরামের আইজল-ত্রিপুরার পানিসাগর-মেঘালয়ের শিলং ও আসামের করিমগঞ্জ হয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ইয়াবার বৃহৎ চালান প্রবেশ করছে বাংলাদেশে।

ইত্তেফাক/এমএএম