ধোঁয়ার গন্ধ আসছে। আশেপাশে কৌতুহলী মানুষের ভিড়। এরই মধ্যে শেষ সম্বল হারিয়ে ভীষণ মুষড়ে পড়েছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর কৃষি মার্কেটে এ ভয়াবহ আগুন লাগে। এতে ক্ষতিগ্রস্তদের একজন মোহাম্মদ রনি। মাছের ব্যবসা করেন তিনি। কথা হয় তার সঙ্গে ...
ইত্তেফাক: কেমন আছেন?
মোহাম্মদ রনি: সব হারিয়ে কি ভালো থাকা যায়? কেমনে ভালো থাকি। এতদিনের পরিশ্রম- সব বিফলে চলে গেল। চোখের সামনে সব পুড়ে খাক হয়ে গেল।
ইত্তেফাক: আগুনে কত টাকার ক্ষতি হয়েছে আপনার?
মোহাম্মদ রনি: ৭০-৮০ হাজার টাকা। এতদিনের জমানো টাকা- সব। চোখের সামনে সব পুড়ে যেতে দেখলে কার শান্তি লাগে! পথে নেমে গেলাম আমরা। (অঝোরে কাঁদলেন)
ইত্তেফাক: কোথায় থাকেন?
মোহাম্মদ রনি: মোহাম্মদপুরে।
ইত্তেফাক: আপনার সঙ্গে কে কে থাকেন?
মোহাম্মদ রনি: আমি মেসে থাকি। পরিবার গ্রামে থাকে।
ইত্তেফাক: আপনার গ্রামের বাড়ি কোথায়?
মোহাম্মদ রনি: লক্ষ্মীপুর
ইত্তেফাক: সেখানে আপনার কে কে থাকেন?
মোহাম্মদ রনি: গ্রামে আমার মা-বাবা থাকেন। সঙ্গে থাকেন স্ত্রী ও দুই সন্তান।
ইত্তেফাক: পরিবারের কাছে এ মাসের টাকা পাঠাতে পেরেছেন?
মোহাম্মদ রনি: না। পরিবারের কাছে কোনো টাকাই পাঠাতে পারিনি। এটাই সবচেয়ে বড় কষ্টের। আমাদের এখন দিন চলবে কেমন করে। বাড়ি আব্বা-আম্মা, বউ-বাচ্চা আছে। তারা কীভাবে থাকবে।
ইত্তেফাক: আগুনের খবর পেলেন কার কাছে?
মোহাম্মদ রনি: মধ্যরাতে কৃষি মার্কেটে আগুন লাগে। ফজরের নামাজ পড়ার জন্য আমি ঘুম থেকে উঠেছিলাম। নামাজ শেষে কোরআন তেলাওয়াত করছি। এর মধ্যেই টিভিতে খবর দেখে আমার রুমমেট আমাকে এ খবর দেয়। আমি তৎক্ষণাৎ ছুটে আসি মার্কেটে। ততক্ষণে সব শেষ।
ইত্তেফাক: যেদিন মার্কেটে আগুন লাগে, সেদিন আপনার আয় কেমন হয়েছিল?
মোহাম্মদ রনি: বেশ ভালোই হয়েছিল। সারাদিনে আয় হয়েছিল ২ হাজার টাকা। ড্রয়ারে সর্বমোট ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা (হিসাবের খাতা দেখে) জমা রেখেছিলাম। কিন্তু কে জানতো (মধ্যরাতে) এ ঘটনা ঘটবে?