রোববার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

শরীয়তপুরের পদ্মাপাড়

ভাঙনকবলিত নড়িয়া এখন পর্যটন স্পট

আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:৫২

ভাঙনকবলিত উপজেলা শরীয়তপুরের জাজিরা। এ উপজেলায় নড়িয়ায় পদ্মার ভাঙনরোধে নদীশাসন বাঁধ ও পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের অধীনে নদীর পাড়ে নির্মিত হয়েছে ১০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে। যার নাম রাখা হয়েছে ‘জয়বাংলা অ্যাভিনিউ’। এটি এখন ভ্রমণপ্রেমী মানুষের অনন্যঠিকানা। ‘জয়বাংলা অ্যাভিনিউ’ এখন হাজারও মানুষের পদচারণায় মুখর। বিশেষ করে নড়িয়ায় নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধে প্রতি দিন ভিড় জমছে হাজারও দর্শনার্থীর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ‘জয়বাংলা অ্যাভিনিউ’তে কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে, আবার কেউ বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে। জয়বাংলা অ্যাভিনিউর সৌন্দর্যের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়ছে পদ্মার স্বচ্ছ জলরাশি। ইট-পাথরের নগরজীবন থেকে মুক্ত পরিবেশে পদ্মাপাড়ে এসে উচ্ছ্বসিত দর্শনার্থীরা। বাঁধের ব্লকের ওপর হেঁটে, বসে পদ্মার পানিতে পা ভিজিয়ে আনন্দোপভোগ করছেন তারা। পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্যকে স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে যে-যার মতো ছবি তুলছেন। পর্যটকদের বাহারি খাবার জোগান দিতে ইতিমধ্যে এখানে গড়ে উঠেছে ছোটবড় অসংখ্য খাবারের দোকান।

পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ঢাকার হাতিরঝিলের সেতুর আদলে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই কিলোমিটার অংশে খাল খনন করা হচ্ছে। ঐ অংশ দৃষ্টিনন্দন করার জন্য খালের দুই দিকে ব্লক দিয়ে সাজানো হয়েছে। ঘুরতে আসা মানুষদের বসে সময় কাটানোর জন্য বসানো হয়েছে বেঞ্চ।

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার সময় ল্যাম্পপোস্টে জ্বলে উঠে আলো। এ সময় সেখানে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এখান থেকেই পদ্মা সেতুর ল্যাম্পপোস্টের আলো দেখা যায়। ঝিনাইদহ থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছিলেন জামাল আহম্মেদ। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দেখার পর পদ্মার তীরে দাঁড়িয়ে নির্মল পরিবেশে সময় কাটিয়েছি। পরিবেশটা পতেঙ্গার মতো লেগেছে। এমন পরিবেশ ফেলে ফিরতে মন চাইছিল না। স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া জানান, পদ্মাপাড়ে ঘুরতে আসা লোকজনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। হোটেলগুলোতে পদ্মার ইলিশের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে ঘুরতে আসা লোকজন এখানে বসে ইলিশ ভাজা খেতে পছন্দ করেন।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নজরে রাখার জন্য নড়িয়া পৌরসভা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে যুক্ত করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব জানান, পদ্মার ডান তীর রক্ষা প্রকল্প শেষ হওয়ার তিন বছরে নড়িয়ার পদ্মাপাড়ে একটি বাড়িও বর্ষায় ভাঙেনি। সখীপুরের কাজ চলমান আছে। জাজিরার কাজ কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে। দীর্ঘতম নদীভিত্তিক পর্যটন এলাকায় পরিণত হবে শরীয়তপুরের পদ্মার পাড়।

ইত্তেফাক/এমএএম