রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ইজিবাইক চোর চক্রের ৫ সদস্য ও এক ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:৫৩

মাদারীপুর যাত্রীবেশে অভিনব কায়দায় ইজিবাইক চুরির ঘটনায় নারীসহ আন্তঃজেলা চোর চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর উপজেলার শানেরপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় চোরাই দুটি ইজিবাইক উদ্ধার করে পুলিশ। 

এ ছাড়া রাজৈরে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফেরার পথে গ্রাহকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার মূলহোতা মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে র‌্যাব-পুলিশ পরিচয়ে ব্যাংকের ভেতরে ও বাইরে বসে এই কার্যক্রম চালানো আরও ৬ সদস্যের নাম পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) কামরুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মনিরুজ্জামান ফকির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা) ভাস্কর সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আলাউল হাসান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) রব্বানী হোসেন, রাজৈর থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচএম সালাহ উদ্দিনসহ আরও অনেকেই।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কালকিনি উপজেলার চর ঠ্যাঙ্গামারা এলাকার সোহরাব ব্যাপারীর ছেলে আনোয়ার ব্যাপারী (৩৮), পশ্চিম মিনাজদী এলাকার লুৎফর সরদারের ছেলে শাকিল সরদার (২০), কোলচরী সস্থাল এলাকার ছলেমান সরদারের ছেলে রনি সরদার (২২), রায়হান হাওলাদারের স্ত্রী কেয়া মনি (৩৬) ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পূর্ব হাসামদিয়া এলাকার মৃত আজিজ ব্যাপারীরর ছেলে ফেরদৌস ব্যাপারী (৪০) ও মিজানুর রহমান বাচ্চু।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, জেলার বিভিন্ন এলাকায় যাত্রীবেশে ইজিবাইকচালককে চেতনানাশক খাইয়ে একটি চক্র ইজিবাইক ও অটোভ্যান ছিনতাই করতো। চক্রটি ধরতে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। সবশেষ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর উপজেলার শানেরপাড় এলাকায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এ সময় একটি চোরাই ইজিবাইকসহ আন্তঃজেলার চার চক্রের মূলহোতা আনোয়ার ব্যাপারীসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় অভিযান চালিয়ে আরও একটি চোরাই ইজিবাইকসহ ফেরদৌস ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, আন্তঃজেলা চোর চক্রটি সাধারণ যাত্রী বেশে ইজিবাইকে ওঠে। পরে তারা ওই চালক নির্জন স্থানে নিয়ে চেতনানাশক খাইয়ে চালককে অচেতন করে ইজিবাইক ছিনতাই করে। আবার কখনো ধারালো অস্ত্রের মুখেও জিম্মি করে তারা ইজিবাইক ছিনতাই করে। চোরাই ইজিবাইকটি তারা ওয়ার্কশপে নিয়ে যন্ত্রাংশ খুলে তারপর বিক্রি করে। এই চক্রের পাঁচ জন ছাড়াও আরও অনেকে আছেন। তাদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়া রাজৈরের টেকেরহাট বন্দরের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফেরার পথে এক গ্রাহকের টাকা ছিনতাই করে একটি চক্র। র‌্যাব-পুলিশ পরিচয়ে প্রথমে প্রাইভেটকারে তোলা হয় গ্রাহককে। পরে টাকা নিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে মহাসড়কে গ্রাহককে ফেলে রাখা হয়। গত ১৩ আগস্ট ইশিবপুরের আল মুমিন মোল্লার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার পর তদন্তে নামে পুলিশ। বাচ্চুকে বরিশালের উজিরপুরের মালিকান্দা গ্রামের নিজবাড়ি থেকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে পুরো ঘটনার ভয়ংকর তথ্য দেয় সে। গ্রেপ্তার বাচ্চু দীর্ঘদিন ধরে এমন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও একই কাজ করছে বার বার। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ডজনখানেক মামলা।

ইত্তেফাক/পিও