বহুল প্রতিক্ষিত ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান গুরুদাসপুর হয়ে রূপপুরে গেছে। পারমাণবিক বিদুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য এই জ্বালানি ইউরেনিয়াম (ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল) শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুরুদাসপুরে প্রবেশ করে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম বহন করা হয়।
ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িবহর দেখে মহাসড়কের দুই ধারে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ ইউরেনিয়ামের যাত্রায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। এরআগে বেলা ১১টা নাগাদ বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক হয়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা ছেড়ে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের গুরুদাসপুরের কাছিকাটা টোল প্লাজা আসে। এরপর নয়াবাজার হয়ে গুরুদাসপুরের প্রায় ৭ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়ি বহর বড়াইগ্রামে প্রবেশ করে ১১টা ৫০ মিনিটে। এরপর বড়াইগ্রামের মানিকপুর, রাজ্জাক মোড়, থানা মোড় হয়ে বনপাড়া বাইপাস অতিক্রম করে বনপাড়া-পাবনা মহাসড়ক হয়ে রূপপুরের পথে অগ্রসর হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকা থেকে সড়ক পথে এই ইউরেনিয়ামের চালান ভোরে রওনা হয়। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে গাড়িবহরটি গাজীপুর মহানগরীতে প্রবেশ করে। এরপর ইউরেনিয়াম বহনকারী এসব গাড়ি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুর এলাকায় পৌঁছালে একটি গাড়িতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরে মেরামত শেষে সকাল সাতটার দিকে গাড়িগুলো ছেড়ে যায়। এসময় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মোনোয়ারুজ্জামান ইত্তেফাককে বলেন, ইউরেনিয়াম বহর নির্বিঘ্নে যাওয়ার জন্য সাময়িকভাবে অন্যান্য যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী ইত্তেফাককে বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু কাছ থেকে বনপপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের বনপাড়া বাইপাস এবং বনপাড়া-পাবনা মহাড়কের রূপপুর পর্যন্ত সড়ক যানজটমুক্ত রাখতে আজ (শুক্রবার) ভোর পাঁচটা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে ইউরেনিয়াম প্রকল্পে পৌঁছে যাওয়ার পর বাস চলাচল শুরু হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, বনপাড়া এবং পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায় ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাশিয়া থেকে দেশে পৌঁছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান। আগামী ৫ অক্টোবর রূপপুর প্রকল্পে এ জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের উৎপাদনের সক্ষমতা ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। প্রকল্পের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আগামী বছর প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চায়। একই বছর বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরুর আশা করছে তারা।