রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় বদলে যাচ্ছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলা

আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৫৪

রাজশাহীর বাঘায় বিভিন্ন দপ্তর থেকে নানামুখী উন্নয়নের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অবস্থানে রয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর। এ দপ্তরের মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের একটানা ১৫ বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।

এসব উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে টিআর, কাবিখা, ইজিপিপি, ভিজিএফ, মানবিক সহায়তা, সেতু-কালভার্ট নির্মাণ, সৌর বিদ্যুতায়ন স্থাপন, অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব ও চরাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা, আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণ ও প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ওয়াদা মাফিক ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পের অধীন ৪০৮টি বাড়ি নির্মাণ এবং আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১১০টি পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন। একইভাবে উন্নয়ন হয়েছে পার্শ্ববর্তী চারঘাট উপজেলায়।

স্থানীয়রা মনে করছেন, বাঘা-চারঘাট এর সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নেতৃত্বের কারণে এসব উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।

বাঘা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আমলের এক টানা ১৫ বছরে উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য সরকার টিআর খাতে প্রায় ১২০০ প্রকল্পের অনুকূলে চাল এবং নগদ অর্থ মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা, কাবিখা খাতে প্রায় ৮০০ প্রকল্পের অনুকূলে ৫০ কোটি টাকা, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান (কর্মসৃজন) খাতে ২ হাজার  প্রকল্পের জন্য ৩০ কোটি টাকা এবং ভিজিএফ মানবিক সহায়তা (জিআর) ও ৭০টি সেতু কালভার্টসহ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প মিলে আরও প্রায় ৪০ কোটি টাকা। 

এছাড়াও ১২ জন অসহায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি নির্মাণসহ জমি আছে ঘর নেই এ রকম গরিব মানুষের জন্য ৪০৮টি ঘর নির্মাণ ও স্যানিটেশনসহ প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা এবং আশ্রয়ন প্রকল্পে ১১০টি বাড়ি নির্মাণের সঙ্গে সুপেয় পানি, স্যানিটেশন ও বিদ্যুৎ সরবরাহ মিলে প্রায় ১৫৫ কোটি ও পুরো উপজেলাব্যাপী বিভিন্ন সময় অগ্নিকাণ্ড ও চরাঞ্চলে কয়েকদফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা খাতে আরও প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এর মধ্যে বাঘার পদ্মার চরাঞ্চলসহ সমতল এলাকার সকল ফাঁকা রাস্তায় বসানো সৌরস্টিক লাইট বদলে দিয়েছে গ্রামীণ জনপদে রাতের দৃশ্যপট।

তথ্যমতে, এসব বরাদ্দের অনেকটা বাস্তবায়ন করেছে আড়ানী ও বাঘা পৌর সভাসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। বাকি বিশেষ বরাদ্দ থেকে এলাকার উন্নয়ন করেছেন সরকার দলীয় নেতা-কর্মী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ। 

স্থানীয়রা জানান, বাঘা-চারঘাটের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে এসব উন্নয়নমূলক কাজ করা সম্ভব হয়েছে।

এ সকল প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, দু’একটি ব্যতীত প্রায় সকল কাজই মানসম্মত ও টেকসই হয়েছে। 

উপজেলার একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে রাস্তা ছিল না সেখানে গর্ত ভরাট করে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ উন্নয়ন হয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা সংস্কারসহ বিভিন্ন ধর্মীয়  প্রতিষ্ঠানের। এছাড়াও ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র কুঠির শিল্প এবং বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের (ক্লাব-সমিতি) ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। স্থানীয়রা এ সকল উন্নয়ন কাজকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ওয়াদা মাফিক ‘জমি আছে ঘর নেই’ এবং ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহনির্মাণ হতদরিদ্রদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। 

এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, নানামুখী দৃশ্যমান উন্নয়নের কারণে বর্তমান সংসদ ও চারঘাট-বাঘার উন্নয়নের রূপকার এ আসন থেকে আবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।  

উপজেলার নারায়নপুর  গ্রামের বাসিন্দা ফাতেমা খাতুন লতা বলেন, আমার বাড়ির সামনে গ্রামের কিছু নারীদের নিয়ে ৮ বছর আগে এখানে ‘আশার আলো’ নামে একটি কুটির শিল্প কারখানা তৈরি করি। কিন্তু পুঁজির অভাবে বিগত সময়ে কিছুই করতে পারিনি। বর্তমান সরকার আমলে পর্যায়ক্রমে বেশকিছু (টিয়ার) পাওয়ার পর সেলাই মেশিন কিনে সমাজের অসহায় নারীদের কাজে লাগাতে পেরেছি। এ সকল কাজ করে একদিকে যেমন তারা উপকৃত হচ্ছেন অপরদিকে উপকৃত হচ্ছে দেশ। আর এসব উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে শাহরিয়ার আলমের নেতৃত্বের কারণে। 

নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহার উদ্দিন, খাইরুল ইসলাম ও হিমেল বলেন, তাদের গ্রামে বর্ষাকালে নিচু রাস্তায় পানি জমে হাঁটু কাঁদা জমতো। এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে বাড়ি থেকে বের হতে ইচ্ছে করতো না। অথচ বর্তমান সরকার আমলে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায়, (কাবিখা) প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্বারা পাড়া-মহল্লায় অসংখ্য রাস্তা নির্মাণ এবং গ্রামের মধ্য দিয়ে একটি পিচঢালা রাস্তাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে ও ফাঁকা রাস্তায় সৌরবিদ্যুৎ স্টিক লাইট স্থাপন করায় এখন তারা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহামুদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর থেকে মানুষের বাড়িঘর পুড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, কালভার্ট, ব্রিজ নির্মাণ, সৌরবিদ্যুৎ স্টিক স্থাপন এবং অসহায় ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। একইভাবে উন্নয়ন হয়েছে পার্শ্ববর্তী চারঘাট উপজেলায়। তিনি এ সকল উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ ও সফলতার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ইত্তেফাক/এবি