বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
The Daily Ittefaq

তিস্তা অববাহিকায় বড় বন্যার আশঙ্কা, আতঙ্কে ঘর ছাড়ছে মানুষ

আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ২১:৫৩

ভারতের সিকিমে বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি আসায় কুড়িগ্রামের তিস্তা অববাহিকায় বড় বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার সতর্কতা নিয়ে মাইকিংসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চরবাসীদের উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় নৌকা প্রস্তুত ও ৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। সম্ভাব্য বন্যার আশঙ্কায় তিস্তার চর ও তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে এখন বিরাজ করছে আতঙ্ক।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, পানি বাড়তে শুরু করেছে। মধ্যরাতে তিস্তা ব্যারাজ ও ভোরে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। বাঁধসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থাপনা রক্ষায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ছবি: গোলাম মোস্তফা আনছারী

রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউপির সাবেক মেম্বার শহিদুল ইসলাম জানান, ২০২১ সালে তিস্তায় ভয়াবহ বন্যার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তাই এবার জানমালের ক্ষতি এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চর মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসছেন। 

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, সম্ভাব্য বন্যার ক্ষতি এড়াতে জেলা, উপজেলা প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মাঠে কাজ করছেন। উদ্ধার অভিযানের জন্য নৌকা ও ৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান সন্ধার পর থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বিধায় নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষকে রাতের মধ্যেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাবার জন্য বলা হয়েছে। 

ছবি: গোলাম মোস্তফা আনছারী

এদিকে বিকাল সোয়া ৫টায় রংপুরের জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান চরাঞ্চলে গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তার মাইক যোগে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাবার বিষয়ে একমত পোষণ করে বলেন, রাতের মধ্যে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে। চরাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে গরু ছাগলসহ মালামাল নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে আসার আহবান জানিয়ে বলেন দুটি স্থানে পরিবারদের জন্য রাতের খাবার খিচুরী রান্নার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এ কর্মকান্ড চলবে বলেও জানান তিনি। 

এদিকে গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না জানান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পানি বন্দি মানুষকে উদ্ধারের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

এদিকে গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর, নোহালীসহ ২৫টি গ্রামসহ কাউনিয়া উপজেলার ধুসমারার চর, আজম খাঁ চর, হাইবত খাঁ গোনাই, পল্লীমারী, চরএকতা চর মিলনবাজার, গোপীকাল্লা, ডালার চর, চর গোদাই চরের ৭০ হাজার পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেবার কাজ শুরু হয়েছে বলে উপজেলা প্রশষাসন সূত্রে জানা গেছে।  

ইত্তেফাক/পিও