ক্রিকেটে পেস বোলাররা মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি ক্যারিয়ারের বড় একটা সময় লড়াই করে ইনজুরির সঙ্গেও। ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশের গতি তারকা তাসকিন আহমেদও। তুলনামুলক ভাবে এই পেসার বেশ ইনজুরিপ্রবণ। তাই দুই বার আইপিএলের মতো বড় ফ্রাঞ্জাইজি টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পেয়েও খেলতে যেতে পারেনি। এছাড়া ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকেই কাঁধের চোটে ভুগছেন তিনি।
ঐ টুর্নামেন্টের পর বিপিএল দিয়ে মাঠে ফিরেছেন তিনি। তবে নিজের সেই ছন্দ শতভাগ নিয়ে এখনো ফিরতে পারেননি তিনি। এর মধ্যে চলমান এই টুর্নামেন্টের পরেই পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসছে শ্রীলঙ্কা। যেখানে তিনটি টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ম্যাচের পাশাপাশি রয়েছে দুটি টেস্ট ম্যাচও। আর ঐ সিরিজে লাল বলের দুটি থেকে তাকে ছুটি দেওয়ার জন্য বিসিবির অনুরোধ করেছেন তাসকিন।
গত পরশু শনিবার বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স এর প্রধান জালাল ইউনুস নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরপর থেকেই শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সবশেষ গত জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট খেলেছেন তাসকিন। এরপর আর সাদা পোশাকে দেখা যায়নি তাকে। তবে বিষয়টিকে স্বাভাবিক ভাবেই দেখছেন দুর্দান্ত ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। তার মতে তাসকিনকে ফিট দেখতে চাইলে এত টেস্ট না খেলানেই ভালো।
রবিবার মিরপুরে অনুশীলন করে ঢাকা। অনুশীলন শেষে দলের কোচ সুজন গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন। সেখানেই তাসকিন আহমেদের টেস্ট থেকে ছুটি চাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাসকিনের এটা নিজস্ব ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা নিয়ে ও নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে। যেহেতু এখন ওপর বয়স হয়েছে.. তাসকিনের তো এখন আর ২৫-২৬ বছর না। তো বয়স হয়েছে এখন এটা নিয়ে চিন্তা করবেন যে ও কত টুকু পারবে। কারণ এ বছর অনেক টেস্ট অনেক খেলা আছে। তবে আমি এখন মনে করি ওকে হ্যান্ডেল উইথ কেয়ার করাটাই সবচাইতে ভালো হবে কারণ আমাদের কথা হলো যেখানে ওর দরকার নেই বা প্রয়োজন নেই ঐখানে নতুন একটা ছেলেকে আমরা খেলাতে পারব—সেখানে তাসকিনকে না খেলানোই আমার কাছে মনে হয় ভালো।’
এ সময় তাসকিনকে কোনো ম্যাচগুলোতে খেলানো যেতে পারে এ নিয়ে বলেন, ‘ও কে (তাসকিন) আমরা গুরুত্বপূর্ণ সিরিজগুলোতে, বিশ্বকাপের মতো বড় আসর এই জায়গা গুলোতে খেলাতে পারি। যদি আমরা ফিট তাসকিনকে চাই। ফিট তাসকিন বাংলাদেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জেতাতে সহযোগিতা করবে আসলে।’
সবশেষ বিশ্বকাপে কাঁধে চোট পাওয়ার পর মাঠের বাইরে ছিলেন তাসকিন। কাটিয়েছেন পুনর্বাসনে। ছিলেন না ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ও পরবর্তী নিউজিল্যান্ড সফরেও। তবে ঐ সময়টাতে নিজেকে মাঠে ফেরাতে সব কাজই করে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে চলমান বিপিএল দিয়ে মাঠে ফিরেছেন। তবে এই টুর্নামেন্টটিতেও চোটে পড়েছিলেন তাসকিন। অবশ্য সেটা কাটিয়ে আবার মাঠে ফিরেছেন তিনি।
প্রত্যাবর্তনের পর তাসকিনের পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি তার কোচ সুজন, ‘তাসকিন দারুণ, আস্তে আস্তে উন্নতি করছে। দারুণ একটা স্ট্রেন্থ ছিলো এটা নিয়ে যথেষ্ট কাজ করেছে, আমিও ওর সঙ্গে কাজ করেছি। বোলিংয়ে এখনও আমি বলবো সে শতভাগ নয়। মানে ঐভাবে চিন্তা করলে নতুন বলে যেই ছন্দটা সত্য কথা, সবশেষ ম্যাচেও ভালো বোলিং করেছে, প্রতিটা ম্যাচেও ভালো বল করছে তবে এখনো কাজ করার আরও জায়গা আছে অবশ্য এটা তাসকিনও জানে। এনিয়ে সে কঠিন পরিশ্রম করছে। সুতরাং আমার মনে হয় না এটা কোনো চিন্তার কারণ। আমি মনে করি তাসকিন দারুণ ভাবেই কামব্যাক করবে।’