শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
The Daily Ittefaq

ব্রাদার্সকে দেখার কেউ নেই

আপডেট : ১১ মে ২০২৪, ১৮:৪০

দেশের ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী ব্রাদার্স ইউনিয়নকে দেখার কেউ নেই। কর্মকর্তারা ক্লাব টেন্ট ছেড়ে দিয়েছেন। তারা কেউ ব্রাদার্সের প্রতি আগ্রহ দেখান না। কর্মকর্তারা পরস্পরের দোষারোপ করছেন, টাকা দেওয়ার কেউ নেই। ভরসা ছিল বসুন্ধরা কিংস। সেই ক্লাব থেকে গত মৌসুমে বড় অঙ্কের টাকা পেয়েছিল ব্রাদার্স। সেই টাকায় বিসিএল থেকে বিপিএলে উঠে এসেছিল। 

ক্লাবের ঐতিহ্য আর কর্মকর্তাদের সম্মান বাঁচাতে নতুন করে ঝেড়ে উঠবেন নীতি-নির্ধারকরা। উলটো তারা ঝিমিয়ে গেলেন। ভালো দল গড়তে টাকা লাগবে, টাকার কথা শুনলে পিছিয়ে যান কর্তারা। এবারও বসুন্ধরা কিছু তরুণ ফুটবলার দিয়েছে, তারা খেলছে বিনা টাকায়, বাফুফের এলিট একাডেমির নেওয়া পাঁচ ফুটবলার খেলছেন, সেখানেও টাকা লাগেনি। বাদ বাকি যারা পারিশ্রমিক চেয়ে না পেয়ে নিজ উদ্যোগে দল ছেড়েছেন।

ওতাবেক ছিলেন, তিনি প্রথম পর্বেই বিদায় নিয়েছেন, আরও এক জন বিদেশি ছিলেন, তিনিও চলে গেছেন যোগ্য পারিশ্রমিক না পেয়ে। এছাড়াও দেশি একাধিক ফুটবলারও ব্রাদার্স ছেড়ে চলে গেছেন। আফসোস নেই কর্মকর্তাদের। এখন যারা রয়েছেন তারা নিজেরাই বলছেন, কোনো পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। তাদের মতে ক্লাব নীতি-নির্ধারকরা চাইছেন বিনা টাকায় খেলাবেন। ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ মহিউদ্দিন আহমেদ মহি ক্লাব ছেড়ে দিয়েছেন। ক্লাবে আসতে বললেও আসেন না। বাফুফে সহসভাপতি মহি। বাফুফের সভায় কণ্ঠ সোচ্চার করছেন, বিওএতে আছেন, সেখানেও নিয়মিত থাকছেন সভায়। 

কিন্তু ব্রাদার্সে আসতে বললে তার আগ্রহ থাকে না বলে ব্রাদার্সের লোকজনের দাবি। মহি নাকি অনেক বারই পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু করেননি। ক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম নাকি খবরও রাখেন না। দুই জনের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে গেছে। তাহলে ক্লাবের অভিভাবকটা কে। গাম্বিয়ান কোচ ওমর সিসে মাঠে থাকছেন, খেলোয়াড়দের কাছ থেকে জানা গেল, ক্লাবের ভেতরে নামাজ পড়ান ফারুক। তিনি ক্লাবের পুরো দেখভাল করেন, অনুশীলন দেখতে যান। কখনো কখনো কোচের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে অংশ নেন। কীভাবে ফুটবল খেলতে হবে, সেটি নিয়েও খেলোয়াড়দের পরামর্শ দেন।

ব্রাদার্সের ফুটবল কমিটি আছে। একদিনও তারা সভা করেনি। কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছিল। তবু কমিটি তাদের কাজ নিয়ে বসেনি। ব্রাদার্সের সদস্য মহিদুল মিরাজের কথা, ‘দলের এই সংকট মুহূর্তে ব্রাদার্সের সদস্য হিসেবে কষ্ট আমারও আছে। হ্যাঁ এটা ঠিক যে, সদস্য হিসেবে আমিও দায় এড়াতে পারি না। তবে সত্য কথা হচ্ছে, যারা মূল দায়িত্বে আছেন, তারা কি প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে একবার পরিকল্পনা করেছিলেন? একটা দল খেলবে, ন্যূনতম পরিকল্পনা থাকা দরকার। আমি তো দেখছি না, কোনো পরিকল্পনা ছিল। ব্রাদার্সের মতো ঐতিহ্যবাহী ফুটবল দল, খেলবে লিগের বড় আসরে। অথচ সেটা নিয়ে কোনো চিন্তা-ভাবনা থাকবে না, তাহলে এমন দলের অবনমন হওয়াটাই তো স্বাভাবিক।’ মিরাজ বলেন, ‘শুনতেছি খেলোয়াড়রা পারিশ্রমিক পান না। পৃথিবীতে কি এই নিয়ম আছে যে, আপনি খেলাবেন কিন্তু টাকা লাগবে না। কম-বেশি দিতেই হবে।’  

ইত্তেফাক/জেডএইচ