বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
The Daily Ittefaq

বাফুফেকে মোহামেডানের চিঠি

‘রেফারি ওদেরকে জিতিয়েছে’

‘এভাবে চলতে থাকলে ফুটবল ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা ফুটবলের জন্য খেলেছি। আমরা সেক্রিফাইস করেছি। ফুটবল যদি এভাবেই চলে, পতন হয়ে যাবে। রেফারি বাজেভাবে খেলা চালাচ্ছে, সেটা দেশের মানুষ দেখেছেন’

আপডেট : ২৪ মে ২০২৪, ১৪:১১

বুধবার ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন কাপ ফুটবল ফাইনালে বসুন্ধরা কিংস ২-১ গোলে মোহামেডানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ম্যাচের রেফারি জসিম আক্তারের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মোহামেডান। রেফারির কারণে ফাইনাল ম্যাচ হেরেছে বলে জানিয়েছেন মোহামেডানের কর্মকর্তারা। এ কারণে প্রতিবাদ জানিয়ে মোহামেডান চিঠি দিয়েছে বাফুফেকে। 

মোহামেডানের ফুটবল কর্তা আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্স জানিয়েছেন, ‘রেফারি ওদেরকে (বসুন্ধরা কিংস) জিতিয়েছে। আমরা রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে পরাজয় বরণ করেছি।’ প্রিন্স প্রশ্ন করেন, ‘এ ধরনের ফাইনাল খেলার জন্য ফেডারেশন কেন বিদেশি রেফারি আনে না? আমরা বারবার ভালো রেফারি চেয়েছি। কিন্তু তারা আমলে নেয় না।’

১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল বসুন্ধরা কিংস। তারা গোল শোধ করে অতিরিক্ত সময়ের খেলায় গোল করেছিল। সেই গোলটাকেই বিতর্কিত বলছে মোহামেডান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বসুন্ধরা কিংসের জয়সূচক গোলটির ভিডিও ঘুরছে। সেখানে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, মিগুয়েলের কর্নারের বল ধরার জন্য মোহামেডান গোলকিপার সুজন লাফিয়ে উঠেছেন। পেছনে লাফিয়েছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক সুলায়মান দিয়াবাতে। তারই পাশে লাফিয়ে ওঠেন কিংসের উজবেক ফুটবলার বুবরবেক। এই বুবরবেক কৌশলে পেছন থেকে দিয়াবাতেকে ধাক্কা মারেন। দিয়াবাতে ধাক্কা খেয়ে গোলরক্ষক সুজনের গায়ে পড়েন। পড়ে যান দুজন। বল বেরিয়ে যায়, কিংসের বদলি ফুটবলার জাহিদ ফাঁকায় দাঁড়িয়ে গোল করেন। 

ভিডিওতে দেখা যায় পুরো ঘটনাটা দেখছেন রেফারি জসিম আক্তার। তিনি গোলের নির্দেশ দেন। প্রিন্স বললেন, ‘এটি ফাউল ছিল। কিন্তু রেফারি দাঁড়িয়ে দেখেও গোলের সিদ্ধান্ত দিলেন।’ ফাইনাল ম্যাচের আরও অনেক ভিডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মোহামেডান ফুটবল কর্তারা এগুলো অন্যদেরকেও দেখাচ্ছেন। রেফারি কীভাবে মোহামেডানকে বঞ্চিত করেছেন, তা নিয়ে কথা বলছেন। মোহামেডান বলছে রেফারির অন্যায়গুলো বাফুফেকে বলা হয়েছে। প্রিন্স বলেন, ‘আমরা চিঠি দিয়েছি বাফুফেকে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি।’ প্রিন্স জানিয়েছেন দিয়াবাতেকে বক্সে ফেলে দিল, আমরা পেনাল্টি পেলাম না।’

মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকিব ও ফুটবল কর্তা আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্স।

গতকাল ভরদুপুরে মোহামেডান টেন্টে কোচের রুমে ফুটবল কোচ আলফাজ আহমেদ, ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকিব। তাদের কথা এভাবে চললে ফুটবল ধ্বংস হয়ে যাবে। আলফাজ বলেন, ‘রেফারি তার আইন প্রয়োগ করতে পারেনি। মিগুয়েল হাত ব্যবহার করেছে। লাল কার্ড পাওয়ার মতো অন্যায় করেও পার পেয়ে গেছেন। বিশ্বনাথ লাল কার্ড পাওয়ার মতো অপরাধ করেও একটা হলুদ কার্ড পেয়েছেন। এর পরও মারাত্মক মারাত্মকা ফাউল করেও দিব্যি খেলে গেছেন। এমনটা যখন চলতে থাকবে তখন খেলোয়াড়রা সুযোগ পেয়ে যায়।’ 

মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকিব বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে ফুটবল ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা ফুটবলের জন্য খেলেছি। আমরা সেক্রিফাইস করেছি। ফুটবল যদি এভাবেই চলে, পতন হয়ে যাবে। রেফারি বাজেভাবে খেলা চালাচ্ছে, সেটা দেশের মানুষ দেখেছেন। আমাদের ফুটবলারদের গায়ে ধাক্কা দিয়ে খেলেছে। মোজাফফরভের সিনগার্ডের ভেতরে কেটেছে। সবার মুখে রেফারির সমালোচনা। খেলা চলাকালীন দেখেছি বসুন্ধরার কোচ অস্কার ব্রুজন আমাকে বলছেন, তুমি রেফারি নিয়ে কথা বলছ কেন, রেফারি তো ভালোই চলাচ্ছে।’

ইত্তেফাক/জেডএইচ