ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে একদিকে কালো বোরখা পরিহিত নারীরা শোক পালন করছেন অন্যদিকে একদল রাস্তায় আতশবাজি ফাটিয়ে, পার্টি করে, নগ্ন ছবি প্রদর্শন করে তারই মৃত্যু উদযাপন করছেন।
ইরানের এক শ্রেণির নারী-পুরুষ রাইসির মৃত্যুতে আনন্দ করতে গিয়ে নিজেদের নগ্ন ছবি পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু কেনো তারা এমনটা করছেন?
এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং মন্ট্রিলের রাউল-ডানডুর্যান্ড চেয়ারের সহযোগী গবেষক হানিহ জিয়াই বলেন, রাইসির মৃত্যুতে আনন্দ প্রকাশ করতে গিয়ে নগ্নতা পোস্ট করা একধরনের ‘শ্বাসরুদ্ধকরন’ থেকে মুক্তি পাওয়ার বহিঃপ্রকাশ। তারা এতদিন ‘দমবন্ধ’ পরিস্থিতি অনুভব করেছে। এখন তারা সব কিছু খুলতে চায় এবং এটা হয়তো তারই বহিঃপ্রকাশ।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে রাইসির মৃত্যু উদযাপনের জন্য নগ্ন হওয়ার আহ্বান জানান একজন ইরানি ইনফ্লুয়েন্সার। রাইসির হেলিকপ্টার নিখোঁজের খবরে তিনি প্রথম পোস্টে বলেছিলেন, রাইসি মারা গেলে তিনি একটি নগ্ন ছবি পোস্ট করবেন।
সম্ভবত তিনি মজার ছলে কিংবা সাহসী রাজনৈতিক প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে এই ঘোষণা দিয়েছিলেন কিন্তু তার এই ঘোষণা অনেক ইরানিকেই প্রভাবিত করেছে। তারাও এমনটা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইরানে নারীদের পোশাক নিয়ে কট্টর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সম্প্রতি কয়েকজন নারী নীতি পুলিশিংয়ের শিকার হয়ে মারাও গেছেন। অনেককেই শাস্তি পেতে হয়েছে। রাইসির মৃত্যুতে তারা পোশাকের স্বাধীনতা ও নিপীড়নের প্রতিবাদ হিসেবে নগ্ন ছবি পোস্ট করেছেন বলেও মনে করেন সোশ্যাল মিডিয়ায় উপসংস্কৃতি এবং সামাজিক আন্দোলনে বিশেষজ্ঞ সিয়াভাশ রোকনি।
তিনি বলেন, রাইসি নিপীড়নের প্রতীক। তার আমেলে নগ্নতা এবং শরীর সবসময়ই নিষিদ্ধ ছিল।
রোকনি বলেন, নগ্ন হয়ে এই ইরানীরা পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে এবং ইরানী সমাজে, বিশেষ করে ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে শারীরিক নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে শুরু করেছিল।