ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অচলাবস্থা নিরসনে ইরান ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মধ্যে পরিকল্পিত আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার আইএইএর একটি গোপন প্রতিবেদনের সূত্রে এ কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৯ মে হেলিকপটার দুর্ঘটনায় ইব্রাহিম রাইসি ও অন্যদের মৃত্যুর এক দিন পর ইরান ইঙ্গিত দিয়েছিল, ‘বিশেষ পরিস্থিতি’র কারণে তারা আর আলোচনা করতে পারছে না। আলোচনার জন্য একটি নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হবে। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির লাগাম টানার বিনিময়ে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয়েছিল ২০১৫ সালে। কিন্তু চুক্তিটি ভেঙে পড়ার থেকে ইরান এবং আইএইএর মধ্যে বারবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইএইএকে সহযোগিতা করা কমিয়ে দিয়েছে তেহরান। পারমাণবিক কর্মসূচি পর্যবেক্ষণে জাতিসংঘের পরিদর্শকদের বাধা এবং নজরদারি ডিভাইসগুলো নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে তারা।
তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে চলতি মাসের শুরুতে ইরান সফর করেন আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রসি। কিন্তু সফর থেকে ফিরেই ‘সম্পূর্ণ অসন্তোষজনক’ সহযোগিতার জন্য ইরানের তীব্র নিন্দা করেন তিনি। আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসছে আইএইএর বোর্ড অব গভর্নরস। তার আগে এএফপির দেখা পৃথক একটি গোপন প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, ইরানের মজুত করা ইউরেনিয়ামের পরিমাণ তেহরান ও বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্যে ২০১৫ সালে সই হওয়া চুক্তিতে নির্ধারিত সীমার ৩০ গুণেরও বেশি দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, গত ১১ মে পর্যন্ত ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মোট মজুত ৬ হাজার ২০১ দশমিক ৩০ কেজি অনুমান করা হয়েছে, যা গত ফেব্রুয়ারিতে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিক রিপোর্ট থেকে ৬৭৫ দশমিক ৮ কিলোগ্রাম বেশি। যুক্তরাষ্ট্র-ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে এখন পর্যন্ত তাদের চেষ্টায় কোনো ফল আসেনি।