মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

‘কোনোদিনও ভাবং নাই মুই পাকা ঘরত থাকিম’

আপডেট : ০৬ জুন ২০২৪, ২০:০৫

‘মুই কি জানং বাহে, কোনোদিন পাঁকা ঘরত থাকিবার পাইম। শেখের বেটি হাসিনা মোর সেই আশা পূরণ করছে।’ এভাবেই সংবাদকর্মীকে পেয়ে অভিমত ব্যক্ত করেন আবাসনে আশ্রয় পাওয়া জোবেনা বেওয়া (৭৫)।

জোবেনা বেওয়া লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের সবদল কুটিরপাড় এলাকার বাসিন্দা। এ সময় কথা হয় এ প্রতিনিধির সঙ্গে। তিনি বলেন, আগত মুই টিনের ঘরের চালাত থাকছং বাহে, ঝড় বৃষ্টিতে ভিজে কোনোরকমভাবে ঘুমাইছং বেড়া ছিল কলাগাছের ডাটা আর পাতা দিয়ে বেড়া দিছনু যাতে বৃষ্টি না আসে। এ্যালা মুই শেখের বেটি হাসিনার দেওয়া পাকা ঘর পেয়ে খুশি হইছং। মুই  তিন বছর থাকি আশ্রয়ন প্রকল্পের পাকা ঘরে সুখে শান্তিতে দিন কাটবার নাগছং।

একান্ত আলাপকালে তিনি জানান, গত দুই যুগ আগে স্বামীকে হারিয়ে সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষা করে স্বামী পরিত্যক্ত একমাত্র মেয়েকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে কোনো রকমভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছিল। কোনো জায়গা জমি ছিল না। এখন আমি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার পাকা ঘরে থেকে মেয়েকে নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছি।

শুধু জোবেনা বেওয়া নয়, এরকম অনুভূতি সরকারে দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে খাস জমি উদ্ধার করে ৮৮২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের দুটি আবাসন প্রকল্প গিয়ে দেখা গেছে, এসব আবাসন প্রকল্পে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। এখানকার অধিকাংশ পরিবার অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবন-যাপন করেন। আবার অনেকেই রিকশা ও শ্রম বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করে থাকে। আবার অনেকেই এসব আশ্রয়ন আবাসনে বসবাস করে জীবনের অনেকটা পরিবর্তন এনেছেন। বসতবাড়ির আশপাশে সবজি চাষাবাদ করে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন। আবার অনেকেই গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগী পালন করে সংসারের স্বচ্ছলতা এনেছেন। এ ছাড়া এখানকার বসবাসকারী  পরিবারগুলো সরকারের সুফলভোগী তালিকায় রয়েছেন।

আদিতমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও গৃহনির্মাণ প্রকল্পের সদস্য সচিব মফিজুল ইসলাম জানান, সরকারের দেওয়া ডিজাইন ও স্টিমেট অনুযায়ী প্রত্যেকটি আবাসন প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, আবাসনে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে সমস্যা সমাধানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ সবসময় খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়। এসব পরিবারে সরকারের দেওয়া সকল সুযোগ-সুবিধা অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপশি তাদেরকে সাবলম্বী করতে নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন সরকার।

ইত্তেফাক/পিও