রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম

শায়েস্তাগঞ্জে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন 

আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:১৪

গত কয়েকদিন ধরে গরমের সঙ্গে তীব্র হয়ে উঠেছে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অসহনীয় লোডশেডিং। এতে অতিষ্ঠ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলাবাসী। বিঘ্নিত এলাকাবাসীর দৈনন্দিন জীবন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়ছেন অনেকেই।

বিষয়টি স্বীকার করে বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষ জানায়, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকের নিচে নেমে আসায় লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। 

জানা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর শহরাঞ্চলে এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর নিয়ম করে লোডশেডিং করা হলেও গ্রাম অঞ্চল গুলোর অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। বেশিরভাগ সময় থাকে না বিদ্যুৎ।

কোথাও এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর পর দেওয়া হয় বিদ্যুৎ। আবার কখনোও টানা ঘনটার পর ঘণ্টা থাকে না বিদ্যুৎ। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছে সাধারণ মানুষ। আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সহ বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীরা। বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল গৃহস্থালি কাজে ব্যাঘাত ঘটায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা বাড়ি ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি অফিসে নষ্ট হচ্ছে কর্ম ঘণ্টা।

চরম মাত্রায় লোডশেডিং এর কারণে ব্যবসায়ীদের লেমিনিটিং মেশিন, বাসা বাড়ির ফ্রিজ, এসি, টিভি ও কম্পিউটার সহ বিভিন্ন দামি দামি জিনিসপত্র নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেশি সময় বিদ্যুৎ না থাকলে ইন্টারনেট সেবা ও বিঘ্নিত হচ্ছে। 

এদিকে ঘন ঘন লোডশেডিং হলেও গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল আসছে বেশি। এ নিয়ে অনেকের মনে রয়েছে অনেক জল্পনা কল্পনা। 

তবে এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভিলেজ ইলেকট্রিশিয়ান মোহাম্মদ আলী বলেন, ঘনঘন বিদ্যুৎ লোডশেডিং  দিলে বিদ্যুৎ বিল  বেশি  আসে। কেননা যাদের ঘরে ফ্রিজ, এসি আছে তাদের বেলায় এটি সবচেয়ে প্রযোজ্য হবে। 

তিনি বলেন, একটি ফ্রিজে ২থেকে ৪ঘন্টা লাগে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঠাণ্ডা হয়ে অটো  বন্ধ হতে। এরই মধ্যে ২-৩ বার বিদ্যুৎ লোডশেডিং হলে এই ফ্রিজটি আর বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যে কারণে ২৪ ঘনটার মধ্যে ৮ ঘণ্টা ফ্রিজটি চলার প্রয়োজন হলেও তা চলবে  প্রায় ২০ ঘণ্টা। তদ্রূপ এসির বেলায়ও সেটি প্রযোজ্য। আর এজন্যই বিদ্যুৎ লোডশেডিং হলেও গ্রাহকের নামে বিল তুলনার চেয়েও কোথায় কোথায় বেশি আসবে। এ ব্যাপারে তিনি ফেসবুকে বিভিন্ন সময় গণসচেতনামূলক লাইভ প্রকাশ করেছেন।

এব‍্যপারে বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিদ‍্যুতিক লাইনে কোন ত্রুটি নেই। চাহিদার তুলনায় বিদ‍্যুৎ সরবরাহ কম থাকায় ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরের ও অ্যান্ড ডেন মো. নাঈমুর রহমান জানান, শুধু হবিগঞ্জে নয় সারাদেশেই লোডশেডিং হচ্ছে।  এপর্যন্ত ৪৩টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ না পাওয়ার মূল কারণ। 

তিনি আরো জানান, হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় মোট গ্রাহকের চাহিদা রয়েছে ১৭০ মেগাওয়াট। আমরা পাচ্ছি ৮২ থেকে ৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। পল্লী বিদ‍্যুত সমিতির নিজস্ব বিদ‍্যুত উৎপাদনের ক্ষমতা নেই। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুত ক্রয় করে সরবরাহ করে। শীতকাল পর্যন্ত এরকম অবস্থা চলবে এরপর আর লোডশেডিং থাকবে না।

ইত্তেফাক/এএইচপি