দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে পুরো চেহারাটা বদলে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)। নতুন বছরে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে সাফের পথচলা শুরু হবে। অনেক দিন ধরেই সাফ বলে আসছিল এক দেশের কেন্দ্রীয় ভেন্যু হওয়ার চেয়ে বিভিন্ন দেশে কীভাবে সাফের খেলা আয়োজন করা যায়। এবার সেটি বাস্তবায়ন করার পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে সাফ।
আগামী ৮ জানুয়ারি নেপালে সাফের নির্বাহী কমিটির সভা। সেখানেই বড় সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে। নির্ধারণ হতে যাচ্ছে সাফের ভাগ্য। নেপালের সভা নিয়ে ঢাকায় সাফের অফিস এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। আগামী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ভিন্ন আঙ্গিকে করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। গ্রুপ পদ্ধতিতে খেলা হবে না। সাত দলকে এক তালিকায় রেখে খেলা হবে লিগ পদ্ধতিতে। প্রতিটা দল ছয়টি করে ম্যাচ খেলবে। নাম দেওয়া হয়েছে হোম অর অ্যাওয়ে। এটি হচ্ছে একটা দল নিজ দেশে তিনটি ম্যাচ খেলবে। প্রতিপক্ষের দেশে তিনটি ম্যাচ খেলবে। পাঁচ দিনের মধ্যে পরবর্তী ম্যাচ খেলতে হবে।
ম্যাচ ডের দিনে অর্থাৎ এক দিনে একসঙ্গে তিন দেশে খেলা হবে। একই সময়ে খেলা শুরু হবে। পাঁচ দিন পর আবার ম্যাচ। নিজ দেশে ম্যাচ খেলে পরবর্তী ম্যাচের জন্য বিমানে উঠতে হবে। বিভিন্ন দেশে ঘুরে ঘুরে সাফের ম্যাচ খেলতে হবে। এতে প্রত্যেক দেশের ফুটবল দর্শকরা সাফের আনন্দ পাবেন। সাফের সঙ্গে সিংগাপুরভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান চুক্তি করবে। তারা এরই মধ্যে আসিয়ান দেশেও এভাবে কাজ করেছে।
পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানও হোম অর অ্যাওয়ে পদ্ধতিকে সমর্থন দিচ্ছে। সাফের নীতিনির্ধারকরাও এক মত, তবে সেটি চূড়ান্ত রূপ দিতে সভায় আলোচনা হতে হবে। সাফের সাধারণ সম্পাদক আনেয়ারুল হক হেলাল সেটিই জানালেন। তিনি বলেন, 'সাফে সাত দেশের কর্মকর্তা রয়েছেন, তারা সভায় বসলে সিদ্ধান্ত নেবেন কীভাবে খেলাটা হবে। আমরা হোম অর অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে করতে প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি। সেন্ট্রাল ভেন্যুতে সাফ আয়োজন করার পরিকল্পনা রাখছি না। হোম অর অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে না হলে পুরোনো ফরমেটে হবে সাফ।'
এ পদ্ধতিতে একটা দেশকে প্রচুর ভ্রমণ করতে হবে। হেলাল বলেন, 'এটা কোনো ব্যাপার না। কঠিন কিছু না। এই সিস্টেমে খেলা হয়। কোনো সমস্যা হয় না। ট্রাভেল করে খেলা যায়।' চোখের সামনেই উদাহরণ রয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবলের দেশগুলো পুরো মাস জুড়ে বিভিন্ন শহর ভ্রমণ করেই খেলছে। সাফের ফাইনাল ম্যাচ কীভাবে হবে? সে বিষয়ে আনোয়ারুল হক হেলাল বলেন, 'ফাইনালের বেলায় হোম অর অ্যাওয়ে থাকবে না। এবার ফাইনাল হবে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে। ফাইনাল ম্যাচ হবে দুইটা।'
যদি এই নিয়মে সাফের খেলা অনুমোদন হয় তাহলে আগামী সাফের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন বলতে কিছু থাকবে না বলে জানিয়েছেন হেলাল। প্রথম দিনে একসঙ্গে তিন দেশে খেলা শুরু হবে। কেউ যদি নিজের দেশে খেলা শুরু হওয়ার আগে কোনো আনুষ্ঠানিকতা করতে চায়, সেটি সেই দেশের ব্যাপার। তবে সাফ থেকে কিছু করার পরিকল্পনা নেই। আগামী জুন-জুলাইয়ে হবে সাফ। ১ মাস ৫ দিন লাগবে সাফ শেষ করতে।