শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১
The Daily Ittefaq

‘আম্মা খেলা দেখতে ভয় পান’

আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৪১

ছেলে ব্যাট হাতে ২২ গজে লড়াই করছেন, আর মা টিভির সামনে বসে সেই দৃশ্য দেখছেন। তবে যখনই ছেলে আউট হয়ে যান, কষ্টটা বেশি পান মা। এ কারণে শাহাদাত হোসেন দিপুর মা খেলা দেখতে একটু ভয় পান। সিলেটে দাঁড়িয়ে এমনটাই জানিয়েছেন এই ক্রিকেটার। এক মাস পরে ২৩ বছরে পা দেবেন ডানহাতি ব্যাটার দিপু। এই মুহূর্তে তিনি ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে একাদশ বিপিএল খেলছেন। স্বপ্ন রয়েছে সেরা অর্জনগুলো হাতে তুলে নেওয়ার। ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা এই ক্রিকেটার আপাতত দৃষ্টি রাখছেন বিপিএলেই। তার কথা তুলে ধরেছেন রায়হানুল সৈকত।

প্রশ্ন: এখনো কোনো ম্যাচ জিততে পারেননি। সিলেটে কী জয়খরা কাটবে?

দিপু: এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। ভালোভাবে অনুশীলন করতে পারছি, এখানকার উইকেট খুব ভালো, সুযোগ-সুবিধাও অনেক বেশি। জিততে না পারলে তো সবারই খারাপ লাগে। চেষ্টা করছি এখান থেকে বের হয়ে আসার। আশা করছি পরের ম্যাচে বাউন্স ব্যাক করতে পারব।

প্রশ্ন: বিপিএল থেকে প্রত্যাশা কেমন?

দিপু: গেল বার থেকে আমার বিপিএল খেলা শুরু হয়েছে। এবার দ্বিতীয়বারের মতো খেলছি। চেষ্টা করি প্রতিটি ম্যাচ ভালো খেলতে। আমার জায়গা থেকে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। আর লক্ষ্য থাকে, ফাইনালে খেলা, চ্যাম্পিয়ন হওয়া। এবার সেই মানসিকতাই রয়েছে। এখন দেখা যাক সামনে কতটুকু করতে পারি।

প্রশ্ন: তিন ফরম্যাটের মধ্যে কোনটি বেশি পছন্দের?

দিপু: পছন্দের কোনো ফরম্যাট সেভাবে নেই। যখন যে ফরম্যাটে খেলি তখন সেই ফরম্যাট উপভোগ করি। আর উপভোগ করে ক্রিকেট খেলাটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো জায়গায় নিজেকে যেন মানিয়ে নিতে পারি, সেভাবেই ছোটবেলা থেকে এগিয়ে চলেছি।

প্রশ্ন: ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন। এখনো সেই স্মৃতি তাড়া করে?

দিপু: ঐটা কখনো ভুলতে পারব না। আমি মনে করি, আমার জন্য সেরা অর্জন ছিল। আমি যখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভালো খেলেছি তাদের দেশে গিয়ে, তখন ভীষণ ভালো লাগা কাজ করেছিল। বিশ্বকাপে ভালো খেলেছিলাম। আর দল যখন চ্যাম্পিয়ন হলো তখন পরিপূর্ণতা এসেছিল।

প্রশ্ন: বাবার স্মৃতি কেমন ছিল?

দিপু: প্রতিটি পদক্ষেপে বাবার কথা আমার মনে পড়ে। বিশেষ করে আমি যখন কিছু অর্জন করি, তখন ভীষণভাবে বাবার কথা মনে পড়ে।

প্রশ্ন: ক্রিকেটার হওয়ার পেছনে কার অবদান রয়েছে?

দিপু: যখন বাবা মারা গেলেন তারপর থেকে বড় ভাইয়ের বন্ধু সুদীপ্ত দাদাকে সবসময় পাশে পেয়েছি। ভাইকে যখন বলেছিলাম ক্রিকেট খেলব, তখন দাদা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। অ্যাকাডেমিতে ভর্তি থেকে শুরু করে ক্রিকেটের সবকিছু কিনে দিয়েছিলেন সুদীপ্ত দা। ক্রিকেটে লাগে এমন কিছু নেই যা উনি দিতেন না। পরিবার থেকেও সমর্থন পেয়েছিলাম।

প্রশ্ন: আপনার মা খেলা দেখেন?

দিপু: আম্মা টিভিতে আমাকে দেখেন, টিভির দিকে তাকিয়ে থাকেন। আম্মা খেলা দেখতে একটু ভয় পান, কারণ আমি আউট হয়ে গেলে তার খুব কষ্ট লাগে। নামাজ পড়ে দোয়া করেন আমার জন্য। খেলা শেষ হয়ে গেলে হাইলাইটস দেখেন। আর ভালো খেললে তখন আর আম্মা ভয় পান না, তখন খেলা দেখেন

প্রশ্ন: স্মরণীয় কোন ঘটনা?

দিপু: বিশ্বকাপ জিতে আসার পরে আমি একটা স্বর্ণের আংটি দিয়েছিলাম আম্মাকে। এখনো মনে পড়ে সেই দিনের কথা। আম্মা আমাকে একটা চেইন দিয়েছিলেন। এসে আবেগী হয়ে পড়েছিলাম। জড়িয়ে ধরে কান্না করেছিলাম।

ইত্তেফাক/জেডএইচ